কানের নীচে হাতুড়ি অব্যর্থ আঘাত। ওখানেই শেষ জীবন। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়তেন অসহায় শিকার। মাত্র এক বছরে এই নৃশংস উপায়ে ৭০ জনকে হত্যা করেছিল এক যুবক।
দেশের অপরাধ ইতিহাসে অন্যতম কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার পরিচিত ‘কানপাতিমার শঙ্করিয়া’ নামে। তার খুনের ধরনের জন্যই এই নামকরণ।
শঙ্করিয়া সম্বন্ধে খুব বেশি তথ্য জানা যায় না। তার জন্ম হয়েছিল রাজস্থানের জয়পুরে, ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি।
১৯৭৭ সালে আচমকাই জয়পুর শহরে বেড়ে যায় খুনের ঘটনা। পথের ধারে উদ্ধার হতে থাকে মৃতদেহ।
সবক্ষেত্রে খুনের ধরন একই রকম। কানের লতির ঠিক নীচে ভারী অস্ত্রের আঘাত। তদন্তকারী পুলিশের বুঝতে অসুবিধে হয়নি প্রত্যেকটি একই ঘাতকের কাজ।
কয়েক মাস পরে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সিরিয়াল কিলার। তার স্বীকারোক্তি ছিল শিউরে ওঠার মতো।
পুলিশকে সে জানিয়েছিল, গভীর রাতে সে অপেক্ষা করত জয়পুরের নির্জন পথের ধারে। অপেক্ষা করত কখন সে পথে হাঁটবে একা কোনও পথচারী।
একা পথচারী নির্জন রাস্তায় এলেই আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে কানের নীচে হাতুড়ির আঘাত করত। এতই নিখুঁত ছিল নিশানা, মুহূর্তের মধ্যে প্রাণ হারাত সেই ব্যক্তি।
পুলিশের দাবি, জেরায় শঙ্করিয়া স্বীকার করেছিল, এক বছরে সে ৭০ জনের প্রাণ নিয়েছিল।
ধরাশায়ী করার পরে হাতুড়ি আঘাতে যখন শিকার লুটিয়ে পড়ত যন্ত্রণায়, তখন নাকি অদ্ভুত আনন্দ হত তার। পুলিশকে এ কথা নিজেই জানিয়েছিল শঙ্করিয়া। এই অনুভূতির নেশাতেই রোজ রাতে হাতুড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ত সে।
১৯৭৯ সালের ১৬ মে মৃত্যুদণ্ড হয় কানপাতিয়া শঙ্করিয়ার। তখন তার বয়স হয়েছিল ২৭ বছর।
ফাঁসির আগে এই সিরিয়াল কিলার নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিল। মৃত্যুর আগে অনুতপ্ত হয়ে বলে গিয়েছিল, সে নিজের জীবন নষ্ট করেছে। আর যেন কেউ এই পথে না আসে। (ছবি: আর্কাইভ এবং ফেসবুক)