প্রয়াত প্রবীণ আইনজীবী ফালি এস নারিম্যান। — ফাইল চিত্র।
প্রবীণ আইনজীবী ফলি স্যাম নরিম্যানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বিভিন্ন মহলে। ভারতের আইন জগতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। বুধবার সকালে দিল্লিতে নিজের বাসভবনে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সুপ্রিম কোর্টের এই প্রবীণ আইনজীবী। জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। নরিম্যানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের একাধিক আইনজীবী থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীও প্রবীণ আইনজীবীর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
নরিম্যানের জন্ম রেঙ্গুনে। ১৯২৯ সালে ১০ জুলাইতে এক পার্সি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। সিমলায় স্কুল জীবন শেষ করে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাড়ি দেন মুম্বইয়ে (তৎকালীন বম্বে)। সেখানে সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন। তার পর মুম্বইয়ে সরকারি কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পড়াশোনা শেষে বম্বে হাই কোর্টেই আইনজীবী হিসাবে কাজে যোগ দেন।
২২ বছর বম্বে হাই কোর্টে আইনজীবী হিসাবে কাজ করার পর দিল্লিতে এসে সুপ্রিম কোর্টে যোগ দেন। সেখানেই আইনজীবী হিসাবে দীর্ঘ দিন কাজ করেন। অনেক বড় বড় মামলায় তিনি সওয়াল করেছেন। আন্তর্জাতিক আইনজীবী মহলেও তিনি সমাদৃত ছিলেন। দেশের আইন জগতে তিনি ‘পিতামহ ভীষ্ম’ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন।
আইন জগতে তাঁর অবদানের জন্য নরিম্যান পেয়েছেন একাধিক সম্মান। ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করা হয় তাঁকে। ২০০৭ সালে নারিম্যানকে পদ্মবিভূষণ সম্মান দেওয়া হয়। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ছিলেন। তবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দেশে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণার সিদ্ধান্তকে মেনে নিতে পারেননি তিনি। তার পরই অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের পদ থেকে ইস্তফা দেন। দীর্ঘ সময় ভারতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন নরিম্যান। ১৯৯৯ সালে তাঁকে রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে মনোনীত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি কেআর নারায়ণন।
নরিম্যানের মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন আইনজীবী কপিল সিব্বল, প্রশান্ত ভূষণ-সহ প্রমুখেরা। এ ছাড়াও বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে শোক প্রকাশ করেছেন।
অধীর নারিম্যানের মৃত্যুকে ‘জাতীয় ক্ষতি’ বলেও উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নরিম্যান তাঁর কর্মজীবনে প্রভূত খ্যাতি অর্জন করেছেন। আমি তাঁর পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা জানাই।’’