১৮ বছর পর দেশে ফিরলেন পাঁচ ভারতীয়। ছবি সংগৃহীত।
কর্মসূত্রে অনেক ভারতীয়ই দুবাইয়ে পাড়ি দেন। তেমনই তেলঙ্গানার পাঁচ জন ২০০৫ সালে সে দেশে গিয়েছিলেন। এক কোম্পানিতে পাহাদারের চাকরিও জুটিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু আচমকাই পাল্টে যায় সব কিছু। একটি খুনের মামলায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। তার পর ১৮ বছর দুবাইয়ের জেলে কাটানোর পর বাড়ি ফিরলেন পাঁচ জনই। খুশি পরিবারের লোকেরা।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তেলঙ্গানার রাজন্না সিরসিল্লা জেলার বাসিন্দা শিবরাত্রি মল্লেশ, শিবরাত্রি রবি, গোলেম নামপল্লী, দুন্দুগুলা লক্ষ্মণ এবং শিবরাত্রি হনমান্থু বছর ১৮ আগে দুবাইয়ের কাজের সূত্রে গিয়েছিলেন। উপসাগরীয় দেশে মনের মতো কাজও জুটিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গেই কাজ করতেন এক নেপালি যুবক। হঠাৎই খুন হয়ে যান তিনি।
সেই খুনের মামলায় নাম জড়িয়ে যায় তেলঙ্গানার পাঁচ জনেরই। পুলিশ তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধেই প্রমাণ জোগাড় করে। আদালত পাঁচ জনকে দোষী সবাস্ত্য করে ২৫ বছর জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। সাজা মুকুবের আর্জি জানান তাঁরা আদালতে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তার পর জেলেই জীবন কাটাচ্ছিলেন তাঁরা।
ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) দলের কার্যকরী নেতা তথা তেলঙ্গানার প্রাক্তন মন্ত্রী কেটিআর পাঁচ বন্দিকে মুক্ত করতে উদ্যোগী হন। অবিরাম কথাবার্তা চালিয়ে যান তিনি। ২০১১ সালে নেপালেও গিয়েছিলেন তিনি। মৃত পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কেটিআর। ১৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণও দেন মৃতের পরিবারকে।
দুবাইতে ওই পাঁচ জনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভাষা। পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে ওঠে। আদালত বার বার তাঁদের আবেদন খারিজ করে দেয়। দীর্ঘ দিন জেলে কাটানোর পর পাঁচ বন্দির কাছে ‘মুক্তি’র সুযোগ আসে। দুবাইয়ে আইনে পরিবর্তন হয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে কেটিআর আবারও কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হন। তিনি আবেদন করেন যাতে তেলঙ্গানার পাঁচ বন্দিকে মুক্ত করে দেশে ফেরানো হয়। দুবাইয়ের শাসক শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে কথাবার্তার পর পাঁচ জনকে মুক্তি দেওয়া স্থির হয়। তার পর আদালত পাঁচ জনের ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর করে। ১৮ বছর দুবাইয়ের জেলে কাটিয়ে তেলঙ্গানার গ্রামে ফিরলেন তাঁরা। বিমানবন্দরে তাঁদের নিতে এসেছিলেন পরিবারের লোকেরা। এত বছর পর পরিবারের সঙ্গে দেখা হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েন সকলে।