সুপ্রিম কোর্টে বড় ধাক্কা খেল কেন্দ্র। আপাতত স্থগিত হয়ে গেল রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের প্রয়োগ। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, কেন্দ্রীয় সরকার যতদিন না ব্রিটিশ আমলে তৈরি আইনের পুনর্বিবেচনা করছে, তত দিন পর্যন্ত এই আইন প্রয়োগ স্থগিত থাকবে। শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই আইনে আর কোনও গ্রেফতার হবে না। ইতিমধ্যেই এই আইন প্রয়োগ করে যে সমস্ত মামলা চলছে, তা স্থগিত হয়ে যাবে। এই আইনের বলে বন্দিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, যত দিন রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা চলছে, তত দিন কি এই আইনের আওতায় রুজু হওয়া মামলা স্থগিত রাখা যায়? পাশাপাশি আদালত কেন্দ্রের কাছে জানতে চায়, কেন্দ্রীয় সরকার কি রাজ্যগুলোকে এই আইন প্রয়োগ করে কোনও পদক্ষেপ না করার কথা বলতে পারে? বুধবার কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানায়, তারা রাজ্যগুলোকে বলতে পারে, পুলিশ সুপার বা তার চেয়ে উঁচু পদমর্যাদার আধিকারিকরাই যেন কেবল রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে পারেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বুধবার সাফ জানিয়ে দেয়, যত দিন না রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের পুনর্বিবেচনা শেষ করছে কেন্দ্র, তত দিন স্থগিত থাকবে এই আইনের প্রয়োগ।
একই সঙ্গে সর্বোচ্চ আদালত জানায়, নতুন করে এই আইন প্রয়োগ করে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। এই আইনে এখন যে সমস্ত মামলা চলছে, তা স্থগিত হয়ে যাবে। এবং এই আইনে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা জামিনের আবেদন করতে পারবেন। তা সত্ত্বেও যদি এই আইনে কারও বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়, তাহলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবেন।
এই প্রসঙ্গে অন্যতম মামলাকারী তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র নিজের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘আমার দীর্ঘদিনের লড়াই আজ স্বীকৃতি পেল। সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চকে এই রায় প্রদানের জন্য আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। আশা রাখি যে কেন্দ্রীয় সরকার যথোপযুক্ত পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই আইনের বিলোপ ঘটাবে।’’