কাছাকাছি মমতা ও যোগী। পিটিআই
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যোগী আদিত্যনাথ। ভারতীয় রাজনীতির দুই মেরুর বাসিন্দা। কোনও সখ্যের কথা অতীতে শোনা যায়নি। কাছাকাছি আসতেও দেখা যায়নি কখনও। কিন্তু শনিবার কাকতালীয় ভাবে তাঁদের বসার ব্যবস্থা ছিল কাছাকাছি। সেই সূত্রেই তাঁরা কাছাকাছি এলেন। কথাও বললেন। তবে কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি। কেউ পরে এ নিয়ে মুখও খোলেননি। তবে সেই সভায় উপস্থিতরা বলছেন, দূর থেকে যে টুকু মনে হয়েছে, তাতে দিদি ও যোগীর মধ্যে নিছকই সৌজন্য বিনিময় ছিল রাজধানীর ওই সভায়।
শনিবার রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং বিভিন্ন রাজ্যের হাই কোর্টের বিচারপতিদের একটি আলোচনাসভা ছিল। ‘চিফ মিনিস্টার্স-চিফ জাস্টিসেস কনফারেন্স অন জুডিশিয়ারি’ শীর্ষক ওই আলোচনাসভায় অন্য বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মমতা মূলত ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই দিল্লি গিয়েছেন। তবে তার মধ্যেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে তাঁর। অরবিন্দ কেজরীবাল গিয়েছিলেন মমতার সঙ্গে দেখা করতে। তবে তার চেয়েও বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে দিদি-যোগী সাক্ষাৎ। যদিও খুব বেশি সময় কথা হয়নি দু’জনের। তবে যে টুকু সময় ছিলেন, তাতেই কৌতূহল চরমে ওঠে উপস্থিতদের। ঝলসে ওঠে চিত্রসাংবাদিকদের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। শুধু সংবাদমাধ্যমই নয়, বাংলা এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, দিদি ও যোগীর দিকে তাকিয়ে রয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব, হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। একটা সময় আবার দিদি ও যোগীর মাঝে এসে দাঁড়ান উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্করসিংহ ধামি।
হেসে হেসেই কথা বললেন ভারতীয় রাজনীতির দুই মেরুর বাসিন্দা মমতা ও যোগী। পিটিআই
আসলে মমতা ও যোগীকে সহাস্য মুখে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখে কৌতূহল তো হবেই। উত্তরপ্রদেশ ভোটে অখিলেশ যাদবের ডাকে সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচারে গিয়ে মমতা মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘যোগী নন, উনি আসলে ভোগী।’’ কম যাননি যোগীও। মমতার উত্তরপ্রদেশ যাত্রা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, ‘‘যিনি বাংলা থেকে উত্তরপ্রদেশে এসে অরাজকতা তৈরির চেষ্টা করছেন। আমি জনতা জনার্দনকে সাবধান করে দিচ্ছি ওঁর বিষয়ে। আমি উত্তরপ্রদেশবাসীকে বলব, যে শান্তি, যে সম্মান আপনারা পেয়েছেন, তা শেষ করে এ বার সিঁদ কাটছেন অনেকেই। উত্তরপ্রদেশকে ফের অশান্ত করার চেষ্টা করবেন তাঁরা।’’ এর পাশাপাশি যোগী টুইটারে লিখেছিলেন, ‘আপনাদের ভোটই উত্তরপ্রদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। নইলে উত্তরপ্রদেশের অবস্থা কাশ্মীর, কেরল এবং বাংলার মতো হতে বেশি সময় লাগবে না।’’ বাংলাকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা তো আসলে মমতা তথা তৃণমূলকেই আক্রমণ।