—প্রতীকী চিত্র।
ছাত্রছাত্রীকে বকাবকি করতেই পারেন শিক্ষক। তা কোনও অপরাধ নয়। তা কখনওই কোনও ছাত্রছাত্রীর মৃত্যুর কারণ হতে পারে না। একটি মামলায় শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজ করে দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। শিক্ষকের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। সেই এফআইআর খারিজ হয়ে গিয়েছে উচ্চ আদালতে।
মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের বিচারপতি আনন্দ পাঠকের পর্যবেক্ষণ, শিক্ষকের কাজ ছাত্রছাত্রীকে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলা। তার জন্য শাসন করতে হয়। প্রয়োজনে বকাঝকাও করে থাকেন শিক্ষকেরা। তা ওই ছাত্র বা ছাত্রীর ভুল শুধরে দেওয়ার জন্যই। একে অপরাধ বলা যাবে না।
গোয়ালিয়রের তেকানপুর এলাকার বিবেকানন্দ হাই স্কুলের ঘটনা। ওই স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্র কিছু দিন আগে আত্মহত্যা করে। অভিযোগ, স্কুলে ছাত্রটিকে বকাবকি করা হয়েছিল। তাতেই অপমানিত হয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রটি। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ছাত্র আরও দুই বন্ধুর সঙ্গে মিলে স্কুলের শৌচাগারে বাজি ফাটাচ্ছিল। ধরা পড়ে যাওয়ায় প্রধানশিক্ষক তাদের বকাবকি করেন। উপপ্রধান শিক্ষক তাদের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলেন। অভিযোগ, এতেই ছাত্রের উপর মানসিক চাপ পড়ে। বাড়ি ফিরে সে গলায় দড়ি দেয়।
এর পরে ওই স্কুলের প্রধানশিক্ষক, উপপ্রধান শিক্ষক এবং আরও এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রের পরিবারের তরফে এফআইআর দায়ের করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এফআইআরের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শিক্ষকেরা।
শিক্ষকদের তরফে আইনজীবী আদালতে জানান, ছাত্রদের বকাঝকা করা হয়েছিল তাদের ভালর জন্যই। তা ছাড়া, ওই ছাত্র যা করেছিল, তাতে স্কুলের দেওয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ফলে স্কুলের সম্পত্তি নষ্ট করলে শিক্ষক ছাত্রকে বকতেই পারেন। ছাত্রের গায়ে হাত তোলা হয়নি বলেও জানান আইনজীবী।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, ছাত্রছাত্রীকে স্কুলে শুধু প্রথাগত পাঠ পড়ালেই হবে না। তাদের সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলাও স্কুলের দায়িত্ব। ছাত্র বা ছাত্রী যদি কোনও ভুল করে, তা শুধরে দেওয়ার জন্য শাসন করাও তাই অপরাধ হতে পারে না।