আশিস মিশ্র। ফাইল চিত্র।
লখিমপুর খেরি মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির ছেলে আশিস মিশ্রের জামিন বাতিল করার চেষ্টা করেনি কেন উত্তরপ্রদেশ সরকার? প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার আশিসের জামিনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে লখিমপুরে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা করেছে, তার শুনানি ছিল। সেখানে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা সরাসরি উত্তরপ্রদেশ সরকারকে কড়া প্রশ্নের মুখে ফেলেন। সোমবারের মধ্যে এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যোগী সরকারকে।
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট চলাকালীনই ১০ ফেব্রুয়ারি ইলাহাবাদ হাই কোর্টে জামিন পান আশিস। উত্তরপ্রদেশ সরকারের দাবি, তারা হাই কোর্টে জামিনের বিরোধিতাই করেছিল। কিন্তু সু্প্রিম কোর্টের প্রশ্ন, জামিনের বিরোধিতা যদি করারই ছিল, তা হলে জামিন বাতিলের আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আসেনি কেন সরকার? বিশেষত লখিমপুর মামলার তদারকিতে সু্প্রিম কোর্ট নিজে একটি বিচারবিভাগীয় কমিটি গঠন করে দিয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাকেশকুমার জৈনের সেই কমিটি সরকারকে সুপারিশও করেছিল তারা যাতে জামিন বাতিলের জন্য উদ্যোগী হয়। প্রধান বিচারপতি রমনা এবং বিচারপতি সূর্য কান্ত আজ সে কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিটের মাধ্যমে সু্প্রিম কোর্টের গড়ে দেওয়া কমিটি সরকারকে দু’টি চিঠি পাঠিয়েছিল। সেখানে আশিসের জামিন বাতিল করার আপিল করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সেটা করেনি কেন উত্তরপ্রদেশ সরকার? জানতে চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
জবাবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের হয়ে আইনজীবী মহেশ জেঠমলানী বলেন, কমিটির পাঠানো চিঠি সরকারের কাছে পৌঁছয়নি বলে তাঁকে জানিয়েছেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব। তখনই ডিভিশন বেঞ্চ তাঁকে বলে, সিট-এর রিপোর্ট ভাল করে পড়ে ৪ এপ্রিলের মধ্যে জবাব দিতে।
লখিমপুরের পরিবারগুলির অভিযোগ, হাই কোর্টে সরকার যথাযথ ভাবে জামিনের বিরোধিতা করেনি। কিন্তু গত কাল সু্প্রিম কোর্টে উত্তরপ্রদেশ সরকার জানায়, তারা ‘তীব্র ভাবেই’ জামিনের বিরোধিতা করেছিল। এমনকি জামিনের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করার কথাও ভাবা হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ সেই ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেন, তারই অপেক্ষা-পর্ব চলছে। সরকার এ-ও দাবি করেছে, লখিমপুরের পরিবারগুলির নিরাপত্তার ব্যাপারে সব রকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সাক্ষীদের সঙ্গে পুলিশ নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছে।
লখিমপুরের পরিবারগুলির হয়ে আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে এ দিন জামিনের নির্দেশ স্থগিতাদেশ চেয়ে সওয়াল করেন। সেই সঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘হাই কোর্ট ভাল করে না ভেবেচিন্তেই জামিন দিয়েছে।’’