নীতীশের ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহনের মুক্তি সংক্রান্ত নথি তলব করল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
জেলাশাসক খুনের মামলায় যাবজ্জীবন জেলের সাজাপ্রাপ্ত ‘বাহুবলী’ প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহন সিংহের মুক্তি নিয়ে এ বার বিহার সরকারকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট। আনন্দের মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চ এ সংক্রান্ত সমস্ত নথি তলব করেছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সরকারের কাছে। আগামী ৮ অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি।
সম্প্রতি বিহার সরকার জেলবিধিতে পরিবর্তন ঘটানোয় মুক্তি পেয়েছেন ২৬ জন বন্দি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আইএএস অফিসার তথা গোপালগঞ্জের তৎকালীন জেলাশাসক জি কৃষ্ণাইয়াকে খুনের অপরাধী প্রাক্তন সাংসদ আনন্দমোহন। নিহত কৃষ্ণাইয়ার স্ত্রী উমা বিহার সরকারের সেই সিদ্ধান্তকে শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ১৪ বছর জেল খাটলেও সাজা পূরণ হয়নি প্রাক্তন সাংসদের।
সুপ্রিম কোর্টের একটি পুরনো রায়ের উল্লেখ করে উমার আইনজীবীর যুক্তি, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ডের বিকল্প হিসাবে। তাই দণ্ডিতকে আজীবন কারাবাস করতে হবে। কোনও অবস্থাতেই সাজা মকুব করা চলবে না। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বিহার সরকারের কৌঁসুলির কাছে গত ১০ এপ্রিলের জেলবিধি বদল সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি, জেলবন্দি থাকাকালীন আনন্দমোহনের ‘ফাইল’ এবং মুক্তির নির্দেশিকা সংক্রান্ত আসল নথি তলব করেছে।
১৯৯৪ সালে আমলা জি কৃষ্ণাইয়াকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন আনন্দ। বিহারের জেলবিধিতে আগে কর্তব্যরত সরকারি কর্মী খুনে দোষীদের জেল থেকে মুক্তি নিষিদ্ধ ছিল। সেই নীতিই বদলেছে নীতীশের নেতৃত্বাধীন ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকার। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সরকারি কর্মী খুনের অপরাধী যদি ১৪ বছর জেল খেটে ফেলেন তা হলে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে।
নয়া জেলবিধির ফলেই মুক্তি পান আনন্দমোহন-সহ ২০ জন। বিরোধীদের অভিযোগ, ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এ সব করছেন। ২০২৪ সালের বিধানসভা ভোটে মধ্য বিহারের প্রভাবশালী রাজপুত নেতা আনন্দমোহনের সাহায্য নিতেই তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আনন্দের স্ত্রী তথা প্রাক্তন সাংসদ লাভলিও বর্তমানে নীতীশের দল জেডিইউতে।