প্রতীকী ছবি।
থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত দাদাকে অস্থিমজ্জা (বোন ম্যারো) দিয়ে জীবনদান করল ১ বছরের টেস্ট টিউব বেবি কাব্য। চিকিৎসকদের দাবি, ভারতে এমন ঘটনা এই প্রথম।
আক্ষরিক অর্থেই দাদাকে বাঁচাতে জন্ম হয়েছিল শিশুকন্যা কাব্যর। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, অল্পা এবং সহদেব সিংহ সোলাঙ্কির দ্বিতীয় সন্তান অভিজিৎ জন্মাবধি থ্যালাসেমিয়ায় মেজর-এ আক্রান্ত। ২৫ দিন অন্তর বছর সাতেকের অভিজিতের রক্তের প্রয়োজন হয়। তা না হলে তার জীবনসংশয় হতে পারে। ছ’বছর হওয়ার আগেই তাকে ৮০ বার রক্ত দিতে হয়েছে। সহদেব জানিয়েছেন, অভিজিতের রক্তের প্রয়োজন আরও বাড়ছিল। সে সময় তার অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। তবে পরিবারের কোন সদস্য, এমনকি অভিজিতের দিদিরও বোন ম্যারো এক্ষেত্রে কাজে আসেনি। কারণ, তা অভিজিতের প্রয়োজনীয় এইচএলএ (হিউম্যান লিউকোসাই অ্যান্টিজেন)-র সঙ্গে মিলছিল না। বহু চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার পর অবশেষে আমদাবাদের একটি বেসরকারি ক্লিনিকের সন্ধান পান তাঁরা। সেখানকার চিকিৎসক মণীশ ব্যাঙ্কারের উৎসাহেই অভিজিতের অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের জন্য টেস্ট টিউব বেবির কথা চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন সোলাঙ্কি দম্পতি।
অভিজিৎকে বাঁচাতে আইভিএফ বা ইন-ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন পদ্ধতিতে আরও এক সন্তানের জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাঁরা। চলতি কথায় যাকে টেস্ট টিউব বেবি বলা হয়। তবে ওই পদ্ধতিতে অল্পার সন্তান ধারণের সময় চিকিৎসকেরা খেয়াল রেখেছিলেন যাতে তা অভিজিতের এইচএলএ-র সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রাখে। এর পর গত বছর ১৭ মার্চ জন্ম হয় সোলাঙ্কি দম্পতির তৃতীয় সন্তান কাব্যর।
আরও পড়ুন: কোভিডের ফল জানা যাবে ৫ মিনিটেরও কম সময়ে, যন্ত্র বানাল অক্সফোর্ড
আরও পড়ুন: লাদাখ নিয়ে মন্তব্যের অধিকারই নেই চিনের, জবাব বিদেশমন্ত্রকের
সোলাঙ্কি দম্পতি জানিয়েছেন, কাব্যর জন্মের পর তার ওজন ১০ কিলোগ্রাম হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। চলতি বছরের মার্চে কাব্যর ওজন প্রয়োজনীয় মাত্রায় পৌঁছয়। এর পর তার অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা হয় অভিজিতের দেহে। এর পরেও অভিজিতের সুস্থতার নিয়ে নিশ্চিত ছিলেন না চিকিৎসকেরা। তবে এ দিন সংসাদমাধ্যমে মণীশ জানিয়েছেন, অভিজিতের আর জীবন সংশয় নেই। সেই সঙ্গে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের পর এখন আর রক্তেরও প্রয়োজন নেই অভিজিতের। মণীশের কথায়, “এইচএলএ মিলিয়ে এই প্রথম ভারতে আইভিএফ পদ্ধতিতে জন্মানো শিশু নিজের ভাই বা বোন, বিশেষ করে কোনও থ্যালাসেমিয়া মেজর আক্রান্তকে বাঁচাল।”
অভিজিৎ-কাব্যর বাবা সহদেব স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তিতে। তিনি বলেন, “আমার সন্তানেরা সুস্থ রয়েছে, এটাই বড় কথা।”