#সেভথানো নামে আন্দোলন ক্রমে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে। ছবি: সংগৃহীত।
চিপকো আন্দোলনের উত্তরাখণ্ডে এ বার নতুন পরিবেশ আন্দোলন রাজাজি অভয়ারণ্যের ১০ হাজার গাছকে উন্নয়নের কুড়ুল থেকে বাঁচাতে। #সেভথানো নামে এই আন্দোলন ক্রমে রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে।
রাজ্যের প্রধান বিমানবন্দর দেহরাদূনের জলিগ্রান্ট। রাজাজি জাতীয় অভয়ারণ্যের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে এটির অবস্থান নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। বিমান ওঠানামার তীব্র শব্দ জঙ্গলের পরিবেশ ও পশুপাখিদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রার পক্ষে যে ক্ষতিকর, পরিবেশবিদরা বারে বারে তা বলে এসেছেন। এ বার সেই বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সে জন্য ২৪৩ একর জমি তাদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। থানো অরণ্যের এই জমি রাজাজি জাতীয় উদ্যানেরই অংশ। রাজ্য ও কেন্দ্র এক সঙ্গে এগোনোর ফলে ন্যাশনাল ওয়াইল্ডলাইফ বোর্ডের অনুমোদন পেতেও সমস্যা হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
১০ হাজারেরও বেশি মহীরূহকে ধ্বংস করে সেখানে গড়ে উঠবে বিমানবন্দরের নতুন রানওয়ে ও টার্মিনাস। এর বিরুদ্ধেই পথে নেমেছেন উত্তরাখণ্ডের মানুষ, এক দিন যাঁরা সুন্দরলাল বহুগুণার নেতৃত্বে একএকটি গাছ জড়িয়ে ধরে সরকারকে বার্তা দিয়েছিলেন— গাছ আমাদের প্রাণ। আমাদের না-মেরে গাছ কাটা যাবে না। সরকার পিছিয়ে এসেছিল সে বার। কিন্তু হিমালয়ের কন্যা উত্তরাখণ্ডকে আধুনিকতার শেকল পরাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার একের পর এক পদক্ষেপ করে চলেছে।
নদী সংযোগ কর্মসূচির নামে রাজ্য জুড়ে নদীগুলির স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি বদলে দেওয়ার চেষ্টার কুফল দেখা গিয়েছে কেদারনাথের ভয়াবহ হড়পা বানে। এর পরে কেদারনাথ, বদ্রীনাথ, গঙ্গোত্রী ও যমুনোত্রী— এই চার ধামকে গাড়ি চলার পথে সংযোগের নামে যে প্রকল্প নরেন্দ্র মোদী সরকার নিয়েছে, সেটি-ও হিমালয়ের সংবেদনশীল প্রকৃতিকে ধ্বংসের মুখে দাঁড় করাবে বলে সতর্ক করে দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা। আপাতত ১০ হাজার গাছের প্রাণ বাঁচানোকেই পাখির চোখ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মানুষ।