Darjeeling

Bipin Rawat: সিকিম থেকেই বিপিন-সঙ্গী রাই

দু’দশক আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন সৎপাল। পরিবার সূত্রে দাবি, গোর্খা রেজিমেন্টে ভাল কাজ করার জন্য তিনি বিপিন রাওয়তের চোখে পড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৯
Share:

শূন্যতা: দার্জিলিঙের তাকদার বাড়িতে সৎপালের স্ত্রী মন্দিরা ও মা শান্তমায়া রাই। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।

তখন সকাল সাড়ে আটটা। সৎপাল রাই ‘ডিউটিতে’ বার হচ্ছেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়তের সঙ্গে। যাওয়ার আগে দিল্লির বাড়ি থেকে তিনি ফোন করেন হাজার দুয়েক কিলোমিটার দূরে দার্জিলিঙের তাকদার বাড়িতে। স্ত্রী মন্দিরাকে জানান, বিকেলে পৌঁছে আবার ফোন করবেন। কথা হয় মেয়ে মুসকানের সঙ্গেও। ছেলে বিক্কেলও দিল্লিতে থাকেন। কাজ করেন সেনাবাহিনীতেই। তাঁকেও এক বার ফোন করেন সৎপাল।

Advertisement

সেই শেষ ফোন। এর পরে আসে দুঃসংবাদ, রাওয়তের সঙ্গে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন তাঁর অন্যতম রক্ষী সৎপালও। যা এখনও সামলে উঠতে পারেননি মন্দিরা। বৃহস্পতিবার বাড়িতে বসেছিলেন ভগ্নস্তূপের মতো। পাশে বৃদ্ধা শাশুড়ি। একটাই কথা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছিলেন মন্দিরা, ‘‘আমার এই ব্যক্তিগত ক্ষতি আর পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। তবে দেশের জন্য উনি প্রাণ দিয়েছেন, গর্বের বিষয়। তা হলেও আমরা চাই, এই দুর্ঘটনার গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত হোক। এর পিছনে কোনও চক্রান্ত আছে কি না, তা নিশ্চয়ই বাহিনী, সরকার দেখবে।’’

দু’দশক আগে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন সৎপাল। পরিবার সূত্রে দাবি, গোর্খা রেজিমেন্টে ভাল কাজ করার জন্য তিনি বিপিন রাওয়তের চোখে পড়েন। চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ সৎপালকে নিজের নিরাপত্তা অফিসার ও কর্মীদের দলে জায়গা দেন। বিপিনের ছেলে বিক্কেলও এখন গোর্খা রেজিমেন্টে কর্মরত। ১৬ বছরের মেয়ে মুসকান তাকদায় মা-ঠাকুরমার সঙ্গে থাকে।

Advertisement

সিকিম সীমান্তে চিনের আগ্রাসী মনোভাব, সেতু, রাস্তা নির্মাণ বন্ধ হয়েছিল বিপিন রাওয়তের সময়েই। শিলিগুড়ি করিডরকে সুরক্ষিত রেখেছিলেন তিনি। সেনাপ্রধান হিসাবে ২০১৭ সালে সিকিমেও এসেছিলেন। সেই সময় থেকেই তাঁর সঙ্গে ছিলেন সৎপাল। এ হেন সাহসী সেনানায়কের দুর্ঘটনায় মৃত্যু নিয়ে স্বাভাবিক সন্দিহান তাকদা, গ্লেনবার্ন চা বাগানে সৎপালের পড়শিরাও। প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনা বলে মনে হলেও পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে সেনাবাহিনী। এলাকাবাসীর বক্তব্য, সিডিএমের চপার এ ভাবে শেষ হওয়া নেহাত মামুলি বিষয় নয়। দুর্ঘটনা হতেই পারে, তবে বাকি দিকটাও নজরে রাখা হবে নিশ্চয়ই।

সৎপালের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সৎপাল দেশের জন্য প্রাণ দিলেন। ওঁর মাকে আমি লিখিত শোকবার্তা পাঠিয়েছি।’’ এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব দার্জিলিঙের জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে নিয়ে তাকদায় সৎপালের বাড়িতে যান। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা দিয়ে জানান, রাজ্য সরকার রাই পরিবারের পাশে রয়েছে।

সেনা সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে কর্মরত সেনা অফিসারদের কয়েক জন সৎপালের বাড়িতে এ দিন আসেন। তাঁরা প্রয়াত জওয়ানের মা এবং এক আত্মীয়ের রক্তের নমুনা নিয়েছেন। সেগুলির মাধ্যমে সৎপালের দেহ শনাক্ত করা হবে। তার পরে দেহ তুলে দেওয়া হবে পরিবারের হাতে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement