গ্রাফিক— সনৎ সিংহ
তাঁর নামের প্রথম দু’টি অক্ষরই নীতী। তবে তিনি ‘নীতিবাগীশ’ এমন কথা তাঁর অতি বড় ভক্তও হয়তো বলতে পারবেন না। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সম্পর্কে বলতে গিয়ে বরং গত শুক্রবার থেকে বেছে বেছে এর সম্পূর্ণ বিপরীতার্থক শব্দই প্রয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কেউ বলছেন ‘ডিগবাজি খাওয়া নীতীশ’ তো কেউ বলছেন ‘জোটবদলু নীতীশ’। তবে নীতীশের জন্য ঠিক কোন বিশেষণটি উপযুক্ত তা এ বার বলে দিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। ইংরেজি অভিধান থেকে নীতীশের জন্য শশীর বেছে নেওয়া ওই শব্দটি হল ‘স্নলিগস্টার’। এই শব্দের প্রকৃত অর্থ কী, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ।
শশী যদিও এই শব্দ সরাসরি নীতীশের নাম করে প্রয়োগ করেননি। তবে এক্স হ্যান্ডলে যে সময়ে ওই শব্দটি নিয়ে পোস্ট করেছেন শশী, তার সঙ্গে কাকতালীয় ভাবে মিলে গিয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে নীতীশের ইস্তফা দেওয়ার সময়। রবিবার দুপুরেই বিহারের কংগ্রেস, আরজেডি, সিপিআই এবং জেডিইউয়ের মহাগঠবন্ধনের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিন নীতীশ। দুপুর ১২টার কিছু আগে রাজভবনে গিয়ে বিহারের রাজ্যপালের হাতে ইস্তফাপত্রটি তুলে দেন তিনি। শশী এক্স হ্যান্ডলে ওই পোস্ট করেন ঠিক দুপুর ১২টা বেজে ৩৬ মিনিটে। নিজেরই একটি পুরনো পোস্ট উল্লেখ করে এক্স হ্যান্ডলে শশী লেখেন, ‘‘(দীর্ঘশ্বাস!) ভাবতেই পারিনি সাত বছর আগে আমার লেখা এই শব্দটি আবার এক দিন ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়বে।’’ হ্যাশট্যাগ দিয়ে শশী এর পরেই লেখেন স্নলিগস্টার শব্দটি। যার অর্থ, ‘অতি চতুর এবং নীতিনৈতিকতাহীন এক রাজনীতিবিদ।’
২০১৭ সালে ‘দিনের শব্দ’ শিরোনামে টুইটারে (তখনও নাম এক্স হয়নি) ওই শব্দটি মানে ব্যাখ্যা করে পোস্ট করেছিলেন শশী। সেই সময় কংগ্রেস সাংসদ মাঝেমধ্যেই ‘দিনের শব্দ’ পোস্ট করতেন টুইটারে। শশী ওই শব্দটি পোস্ট করেছিলেন ২০১৭ সালের ২৭ জুলাই। ঘটনাচক্রে সেই দিনও নীতীশ ইস্তফা দিয়েছিলেন বিহারের মহাগঠবন্ধনের সরকারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে এবং তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই যোগ দিয়েছিলেন এনডিএতে। সেটি ছিল তৃতীয় বার নীতীশের এনডিএ যাত্রা। এর পরে অবশ্য ২০২২ সালে বিজেপি ছেড়ে বিহারে মহাগঠবন্ধনের সরকারে মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ। রবিবার যে অবস্থান আবার বদলালেন তিনি। বিজেপিতে চতুর্থ বার ঘরওয়াপসি হল নীতীশের। রবিবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিহারের বিজেপি সমর্থিত মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন নীতীশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা।
আর এই উপলক্ষে সাত বছর আগের শব্দটি আর এক বার মনে করিয়ে দিলেন শশীও। লিখলেন, ‘‘ভাবতে পারিনি এই শব্দটি আরও এক বার প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।’’ কিন্তু না, পোস্টে তিনি এক বারও নীতীশের নাম বলেননি।