২০০০ কোটি টাকার ‘ডিল’! শিন্ডেদের ‘শিবসেনা’ প্রাপ্তি নিয়ে অভিযোগ তুললেন উদ্ধবসেনাপতি সঞ্জয়। ফাইল চিত্র।
শিবসেনার প্রতীক পাওয়ার জন্য ২০০০ কোটি টাকার লেনদেন চুক্তি এবং লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন উদ্ধব শিবিরের নেতা সঞ্জয় রাউত। সঞ্জয়ের আরও অভিযোগ, দলে বিদ্রোহ ঘোষণা করে যে বিধায়করা বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডের শিবিরে ভিড়েছিলেন, তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। রাউতের এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ খুলেছে অধুনা ‘প্রকৃত’ শিবসৈনিক শিন্ডে শিবিরও। তাঁরা রাউতকে কটাক্ষ করে বলেছে, “উনি কি এই আর্থিক লেনদেনের হিসাবরক্ষক ছিলেন?”
রাউত নিজের দাবির সমর্থনে বলেন, “প্রাথমিক ভাবে আমি টাকার এই অঙ্কটাই জানতে পেরেছি এবং এটা ১০০ শতাংশ সত্যি।” এই প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, গোটা দেশে এমন ঘটনার দ্বিতীয় কোনও নজির নেই। শিবসেনার নাম এবং তিরধনুক প্রতীক কারা ব্যবহার করতে পারবে, তা নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই টানাটানি চলছিল উদ্ধব এবং শিন্ডে শিবিরের মধ্যে। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেবের পুত্র উদ্ধব এবং শিবসেনার বিদ্রোহী নেতা শিন্ডের মধ্যে লড়াই চলছিল। সিদ্ধান্ত ছিল নির্বাচন কমিশনের হাতে। গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, শিবসেনার প্রতীক এবং নাম ব্যবহার করতে পারবেন না বালাসাহেব-পুত্র উদ্ধব কিংবা তাঁর নেতৃত্বাধীন দলের অংশ। বদলে একনাথ শিণ্ডের নেতৃত্বে শিবসেনার বিদ্রোহী অংশ, যাঁরা এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন, তাঁরাই ওই প্রতীক এবং নাম ব্যবহার করতে পারবে।
গত জুনে উদ্ধবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন শিন্ডে-সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ শিবসেনা বিধায়ক। যার জেরে শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হয় উদ্ধবকে। পাল্টা শিন্ডে বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে বিজেপির সঙ্গে জোট গড়ে সরকার গঠন করেন। শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই শিবসেনার রাশ কার হাতে থাকবে, এ নিয়ে দুই শিবিরের মধ্যে লড়াই শুরু হয়। কে প্রকৃত শিবসেনা, তা বাছাইয়ের দায়িত্ব যাতে নির্বাচন কমিশনের হাতে না যায়, সে জন্য সুপ্রিম কোর্টেও আবেদন করেছিল উদ্ধব গোষ্ঠী। কিন্তু গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সেই আবেদন খারিজ করে ‘আসল শিবসেনা’ বাছার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের অনুমতি দিয়েছিল কমিশনকে। শিন্ডের সঙ্গে সে সময় উদ্ধব-সঙ্গ ছেড়েছিলেন ৪০ জন সেনা বিধায়ক। রাউতের দাবি, এই ৪০ জন বিধায়কের প্রত্যেককে ৫০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এই দলত্যাগী বিধায়কদের জন্য বিজেপি ২০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। কমিশনের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে আগেই এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছিল উদ্ধবশিবির। রবিবার আরও এক বার শীর্ষ আদালতে যাওয়ার কথা বলেন রাউত। শনিবার নির্বাচন কমিশনকে ‘মোদীর দাস’ বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন উদ্ধব।