ফাইল চিত্র।
এক দেশ, এক ভাষা কার্যকর করার সওয়াল করে এ বার ভাষা বিতর্কে জড়ালেন শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউতও। তাঁর বক্তব্য, গোটা দেশেই হিন্দি ভাষা ব্যবহার করা হয়, এর গ্রহণযোগ্যতাও রয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উচিত, দেশের সমস্ত রাজ্যেই একটি ভাষার প্রচলন করার চ্যালেঞ্জ নেওয়া।
বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘদিনের জোট সম্পর্কে ইতি টেনে কংগ্রেস ও এনসিপি-র হাত ধরে শাসনক্ষমতা দখলে নিয়েছে শিবসেনা। তার পরে বার বার শিবসেনা নেতা রাউত অভিযোগ জানিয়েছেন, শাসক জোটে ভাঙনের চেষ্টা করছে বিজেপি। সেই বিজেপির সুরে সুর মিলিয়ে ‘মরাঠা মানুস’, ‘মরাঠা অস্মিতা’র পক্ষে সওয়াল করা শিবসেনা সাংসদের এমন অবস্থানে জল্পনা শুরু হয়।
রাজনৈতিক শিবিরের অনুমান, চলতি বছরের শেষ দিকে মুম্বইয়ে পুরভোট। ভোটদাতাদের একটা বড় অংশই উত্তর ভারতীয়। যাঁরা হিন্দি ভাষায় স্বচ্ছন্দ। তাঁদের কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত পরিকল্পনামাফিক রাউত হিন্দির পক্ষে সওয়াল করেছেন।
মাসখানেক আগেই অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, হিন্দিকে ইংরেজির বিকল্প হিসেবে গ্রহণ করা উচিত। স্থানীয় ভাষাকে কোণঠাসা করার ইঙ্গিত থাকায় অমিত-বচনের তীব্র বিরোধিতা আছড়ে পড়ে দক্ষিণী রাজ্যগুলিতে। সরব হন রাজনীতিকরাও। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর শিক্ষামন্ত্রী বিদ্রুপ করে প্রশ্ন তোলেন, হিন্দি ভাষা শিখলে কি চাকরি পেতে সুবিধা হবে? সেই নিয়ে কথা প্রসঙ্গেই সাংবাদিকদের সামনে ‘এক দেশ, এক ভাষা’র পক্ষে সওয়াল করেন রাউত।
রাজ্যসভার সদস্য রাউত বলেছেন, ‘‘হাউসে যখনই সুযোগ পাই হিন্দিতে কথা বলি। কারণ, গোটা দেশের শোনা উচিত আমি কী বলতে চাইছি। হিন্দি একমাত্র ভাষা, যার গ্রহণযোগ্যতা গোটা দেশেই রয়েছে।’’ এর পাশাপাশি বলিউডের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, হিন্দি সিনেমা দেশ ও বিশ্বে খুবই প্রভাবশালী। কিছু দিন আগে অভিনেতা অজয় দেবগণও হিন্দি ভাষার পক্ষে সওয়াল করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। রাউত অবশ্য এ-ও জানিয়েছেন, অন্য ভাষাকে অবমাননার উদ্দেশ্য নেই তাঁর।
একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জে হিন্দি ভাষার প্রচারের জন্য আট লক্ষ ডলার খরচ করেছে ভারত। সেই নিয়েও তুঙ্গে বিতর্ক। দেশে যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুড়ছে হেঁশেল, সেখানে সাধারণ মানুষের একাংশ ভাষা বিতর্ক নয়, কর্মসংস্থান, দ্রব্যমূল্যের দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, জাতীয়তাবাদী আবেগ উস্কে দিয়ে প্রকৃত সমস্যা আড়াল করতে সচেষ্ট শাসক বিজেপি।