ফাইল চিত্র।
অমিত শাহ বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন, আইনবিরুদ্ধ কিছুই হয়নি। কিন্তু আইন দেখিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান তুলে ধরছিলেন দলের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরী। অমিতের মত উপেক্ষা করে বরং কংগ্রেস নেতার কথাতেই সায় দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটু ধমকেও দিলেন অফিসারদের। কিন্তু পরক্ষণে মোদী যা করলেন, তাতে চক্ষু চড়কগাছ কংগ্রেসের। নিজের ‘পকেট থেকে’ একটি নাম বের করলেন প্রধানমন্ত্রী। সংখ্যাগরিষ্ঠের জোরে সেই ব্যক্তিই হতে চলেছেন দেশের পরবর্তী মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার (সিভিসি)। সঞ্জয় কোঠারি।
আজ সকাল থেকে কংগ্রেসের একাধিক নেতা এমন অভিযোগেই সরব হলেন। রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা থেকে মণীশ তিওয়ারি— সকলেরই অভিযোগ, আইন, সংবিধান, নিয়মের তোয়াক্কা না করেই সব নিয়োগ হচ্ছে গায়ের জোরে। এ সব বাতিল না হলে আদালতে যাওয়ার পথও খোলা। দুর্নীতি রুখবেন যিনি, তাঁকে পকেটে রাখতেই কী পকেট থেকে নাম বেরোল? এত কী দুর্নীতি আছে, যা লুকোতে এতটা তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর?
বিতর্কটি কী? গত কাল রাতে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ছিল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির বৈঠক। যে বৈঠকে থাকেন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও লোকসভায় সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের নেতা। এখন কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী। সাত মাস পর সিভিসি, সঙ্গে আর একজন ভিজিল্যান্স কমিশনার (ভিসি) এবং মুখ্য তথ্য কমিশনার ও সঙ্গে আর এক তথ্য কমিশনার নিয়োগের কথা। সিভিসি ও ভিসি নিয়োগের জন্য ক্যাবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি সার্চ কমিটি নাম বাছাই করে। ১৮০ জন অফিসার আবেদন করেছেন এই দুই পদের জন্য। সেখান থেকে তিনটি নাম বাছাই করা হয়। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সদস্য অজয় নারায়ণ ঝা, পার্সোনেল বিভাগের প্রাক্তন সচিব ভানুপ্রতাপ শর্মা ও অর্থসচিব রাজীব কুমারের নাম পাঠানো হয় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির কাছে। অথচ সার্চ কমিটিতে ছিলেন খোদ রাজীব কুমার। সদ্য দু’দিন আগে কমিটি থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। বৈঠকে অধীর আপত্তি তোলেন— রাজীব কুমার নিজে আবেদনকারী, সুপারিশকারী আর তাঁর নামই বাছাই হয়ে এসেছে। গোটা পদ্ধতিতেই গরমিল। মুখ্য তথ্য কমিশনারের নামও তথ্য জানার অধিকার আইনে জানানোর কথা। অথচ হয়নি।
কংগ্রেসের অভিযোগ, বৈঠকে অমিত শাহ বোঝানোর চেষ্টা করেন, নিয়মের বাইরে কিছু হয়নি। মোদী বলেন, নিয়ম না মানলে নাম বাতিল। এ কথা বলেই নিজের পকেট থেকে কোঠারির নাম বের করেন। যিনি আবেদনও করেননি। মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘এ কেমন তুঘলকি ফরমান? এ ভাবে তো পিয়নের নিয়োগও হয় না!’’ বিজেপি এখনও চুপ।