কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা।
দলের নেতৃত্ব বদল ও তার জন্য কংগ্রেস সভাপতি পদে নিরপেক্ষ নির্বাচন চেয়ে শ’খানেক কংগ্রেস নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখেছেন বলে দাবি করলেন সাসপেন্ড হওয়া কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় ঝা।
সঞ্জয় দলের নেতৃত্বে শূন্যতা নিয়ে বারবার প্রকাশ্যে মুখ খোলার পরেই কংগ্রেস নেতৃত্ব তাঁকে প্রথমে মুখপাত্রের তালিকা থেকে সরিয়ে দেন। পরে সাসপেন্ড করে। এ বার সঞ্জয়ের এই দাবির পরে কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, এমন কোনও চিঠির অস্তিত্বই নেই।
কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার দাবি, এমন কোনও চিঠি কেউ লেখেননি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিজেপির কথায় এ সব করছেন। যাতে বিজেপির সঙ্গে ফেসবুকের আঁতাতের বিষয়টি থেকে নজর সরে যায়।
সরকারি ভাবে দলের পক্ষ থেকে সঞ্জয় ঝা-র দাবি খারিজ করে দেওয়া হলেও কংগ্রেস সূত্রের খবর, দলের প্রবীণ নেতা, সাংসদ, প্রাক্তন মন্ত্রীদের একটি দল সনিয়ার সঙ্গে দেখা করে নেতৃত্বের সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরিকল্পনা করছিলেন। অন্তর্বর্তী সভানেত্রী পদে সনিয়া গাঁধীর এক বছরের মেয়াদ ১০ অগস্ট শেষ হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের অনেকেই ফের রাহুলকে সভাপতি পদে চাইছেন। কিন্তু না রাহুল এ বিষয়ে তাঁর অবস্থান খোলসা করছেন, না সভাপতি পদে নির্বাচনের কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। রাজস্থানের সঙ্কটের সময়ও দেখা গিয়েছে, সভাপতি পদের দায়িত্ব না নিয়ে রাহুল পিছন থেকে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু শশী তারুর থেকে শুরু করে একাধিক কংগ্রেস নেতা দলের ভিতরে-বাইরে বলেছেন, এই ভাবে নেতৃত্বহীন অবস্থায় কংগ্রেস চলতে পারে না। কংগ্রেস নেতাদের মতে, গাঁধী পরিবারকেই স্পষ্ট করতে হবে তাঁরা নেতৃত্বের বিষয়ে কী ভাবছেন। এই পরিস্থিতি চললে আগামী দিনে অনেকেই জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি বা অন্য দলে পা বাড়াবেন।
আজ সিন্ধিয়া নিজে সচিন পাইলটের বিদ্রোহের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, কংগ্রেসে দলের যোগ্য নেতাদের দিকেই আঙুল তোলা হচ্ছে। সিন্ধিয়া বলেন, “সচিন আমার বন্ধু। তাঁকে কী যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সবাই জানেন। কত দেরি করে কংগ্রেস ফের ঘর গোছানোর চেষ্টা করছে, তা-ও সবাই জানে।”
সিন্ধিয়ার পাশাপাশি এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীও কংগ্রেসে নেতৃত্বের প্রশ্ন তুলে রাহুলকে বিঁধেছেন। হরদীপ বলেন, “কংগ্রেস মতবিরোধ, বাক্স্বাধীনতা, অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের ডেথ চেম্বার। তার সাম্প্রতিক উদাহরণ হল সঞ্জয় ঝা-র বিবৃতি। প্রায় ১০০ জন কংগ্রেস নেতা দলের কাজকর্মে বীতশ্রদ্ধ। তাঁরা নেতৃত্বে বদল চাইছেন। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে স্বচ্ছ নির্বাচন চাইছেন। নেতৃত্বহীন দলে গৃহযুদ্ধ চলছে। কেউ স্বর তুললেই দরজা দেখানো হচ্ছে।”