Mask

করোনা-আবহে ভোটেও সঙ্গী হাতবর্ম আর মুখাবরণ!

করোনা আবহে গ্লাভস হাতে ভোটদান নিয়ে ইতিবাচক চর্চা রয়েছে কমিশনে।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৭:৩৩
Share:

ছবি এপি।

ছোঁয়াচ এড়ানো বড় দরকার। তাই আর আদুর নয়। বর্মে ঢাকবে আঙুল। তা সঙ্গী করে বোতামে চাপ দেবেন ভোটদাতা। তেমন চর্চা চলছে নির্বাচন কমিশনের অন্দরে। করোনা আবহে ভোটার এবং ভোটকর্মীর সুরক্ষাই অগ্রাধিকার। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ভোটদাতার উপস্থিতি নথিভুক্তকরণের পদ্ধতিতেও বদল আনার ভাবনাচিন্তা রয়েছে কমিশনের। বৃহস্পতিবার দেশের সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠক করেন উপ নির্বাচন কমিশনার উমেশ সিনহা, সুদীপ জৈন, চন্দ্রভূষণ কুমাররা। করোনা পরিস্থিতিতে নির্বাচন করা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। সামনে বিহার বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা থাকায় তার উপরে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে কমিশন।

Advertisement

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) বোতাম টিপে মত প্রকাশ করেন ভোটার। করোনা আবহে একই বোতামে ভিন্ন ভিন্ন লোকজনের আঙুল দেওয়া যথেষ্ট ঝুঁকির। তাই বোতামে আঙুল দেওয়ার আগে হাত শুদ্ধ করতে হবে। তারপরে পড়তে হবে গ্লাভস। তবেই বোতামে চাপ দিতে পারবেন ভোটদাতারা। তা শেষে গ্লাভস নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র ছাড়বেন তাঁরা। করোনা আবহে গ্লাভস হাতে ভোটদান নিয়ে ইতিবাচক চর্চা রয়েছে কমিশনে। সঙ্গে থাকবে মুখাবরণ (মাস্ক)ও।

ভোটদানে অংশ নেওয়া ভোটদাতার উপস্থিতির হিসাব রাখে কমিশন। তা নথিভুক্তকরণে কমিশন প্রেরিত কাগজে স্বাক্ষর করেন অনেকে, আবার অনেকে ভোটদাতা টিপসহি ( একটি কালির প্যাড ব্যবহার করে হাতের আঙুলের ছাপ) দিয়ে থাকেন। তাতে বদল আনা নিয়ে আলোচনা করছেন কমিশনের নানা আধিকারিক। ভাবনায় রয়েছে, কোনও একটি বিশেষ স্প্রে হাতে দিয়ে তার ছাপ নেওয়া। সেক্ষেত্রে একই কালি একাধিক ভোটদাতার ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না। বর্তমান ভোট প্রক্রিয়ায় একই পাতায় একাধিক ব্যক্তির উপস্থিতির প্রমাণ স্বরূপ স্বাক্ষর করেন বা টিপসহি দিয়ে থাকেন, তাতেও ঝুঁকি থাকতে পারে। সে কারণে প্রত্যেকের ভোটাদাতার জন্য আলাদা আলাদা পাতায় ব্যবস্থা করা যায় কি না, তার প্রস্তাবও কমিশনে এসেছে। কাঠির মাধ্যমে ইভিএমের বোতামে চাপ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে চর্চা চললেও তার সম্ভাবনা ক্রমে ক্ষীণ হচ্ছে বলে দাবি কমিশনের অনেকের। বোতামে আঙুলের চাপ দিতে সমস্যায় পড়েন বহু বয়স্ক ভোটার। সেখানে কোনও কাঠির মাধ্যমে বোতামে চাপ দেওয়া আরও সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে মত কমিশনের।

Advertisement

এক হাজার ভোটার থাকা বুথে ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সীর সংখ্যা গড়ে একশো জনের আশেপাশে। এই বিপুল পরিমাণে ভোটারের বাড়ি থেকে ভোট আনতে যাওয়ার পরিকাঠামো এখনই গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সে কারণে বিহারের নির্বাচনে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা নিয়ে সমস্যার সম্ভাবনা ছিল। তাই ৬৫ ঊর্ধ্ব বয়সী ভোটারদের পোস্টাল ব্যালট ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত সরে আসা কমিশনের।

কমিশনের কর্মীদের পৌঁছে দেওয়া তথ্য সম্বলিত স্লিপে নির্দিষ্ট এলাকার জন্য নির্দিষ্ট সময় লিখে দিলে বুথে ভিড় কম হবে বলে প্রস্তাব এসেছে কমিশনে। তবে তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা অনেকাংশে কম। "কারও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে তো তাঁর অধিকারে হস্তক্ষেপ।" বলছেন এক কমিশন আধিকারিক।

করোনা আবহে ভোট প্রক্রিয়ায় নানা পদ্ধতির সংযোজন দেশের নির্বাচনী খরচের ইতিহাসে মাইলফলক তৈরি করবে, তা নিয়ে একমত বর্তমান, প্রাক্তন নির্বাচন পরিচালকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement