কুতুব মিনার। ফাইল চিত্র।
মুঘল যুগের পর এ বার নিশানায় সুলতানি আমল। অভিযোগ, ভারত আক্রমণকারী মহম্মদ ঘোরির সেনাপতি (পরবর্তী কালে দিল্লির প্রথম সুলতান) কুতুবুদ্দিন আইবক ২৭টি হিন্দু এবং জৈন মন্দির আংশিক ভাবে ভেঙে বানিয়েছিলেন নিজের নামাঙ্কিত মিনার!
কুতুব মিনার চত্বরে হিন্দু এবং জৈন মন্দির পুনর্নির্মাণের দাবিতে দিল্লির সাকেত আদালতে দায়ের হয়েছিল তিনটি মামলা। কিন্তু বৃহস্পতিবার আদালত সেই আবেদন খারিজ করেছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আবেদনকারী পক্ষের তরফে ভগবান বিষ্ণু এবং জৈন তীর্থঙ্কর ঋষভনাথের নামে দায়ের করা হয়েছিল ওই মামলাগুলি। যেমন অযোধ্যার জমি বিবাদে আবেদনকারী ছিলেন রামলালা স্বয়ং।
সাকেত আদালতের বিচারক নেহা শর্মা বৃহস্পতিবার মন্দির পুনর্নির্মাণের দাবি খাবিজ করে বলেন, ‘‘ভারতের ইতিহাস অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রাজবংশ শাসন এসেছে। আবেদনকারী পক্ষ ‘জাতীয় লজ্জার’ প্রসঙ্গ তুলেছেন। কিন্তু কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না, অতীতে ঘটে যাওয়া অন্যায়কে ভবিষ্যতের অশান্তির ভিত্তি হতে দেওয়া যায় না।’’
আবেদনকারীদের তরফে দাবি করা হয়েছিল, কুতুব মিনার চত্বরের মন্দিরগুলি পুরোপুরি ভাঙা হয়নি। এখনও বিভিন্ন দেওয়ালে গণেশ, বিষ্ণু, নটরাজ, মহাবীর, পার্শ্বনাথের ছবি রয়েছে। রয়েছে মঙ্গল কলস, গদা, ঘণ্টা এবং পদ্মের ছবিও। ওই চিহ্নগুলি হিন্দু এবং জৈন ধর্মস্থানের অস্তিত্বের ইঙ্গিতবাহী।
অযোধ্যার মতোই কুতুব মিনার চত্বরের ‘ধর্মীয় পরিচয়’ জানতে পুরাতাত্ত্বিক খননকার্য চালানোর দাবি জানানো হয়েছিল আবেদনে। কিন্তু বিচারক শর্মা ২০১৯ সালের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের একটি অংশ তুলে ধরেই সেই দাবি খারিজ করেন। শীর্ষ আদালতের ওই রায় রামমন্দির পুনর্নির্মাণে ছাড়পত্র দিলেও বাবরি মসজিদ ধ্বংসের নিন্দা করে স্পষ্ট জানিয়েছিল, ‘দেশের স্বাধীনতাপ্রাপ্তি অতীতের ক্ষত প্রশমনের বড় উপাদান। ঐতিহাসিক ভুল সংশোধন করার জন্য আইন হাতে তুলে নেওয়া যায় না।’