জেনারেল নরবণে এবং এয়ার চিফ মার্শাল ভদৌরিয়া। ফাইল চিত্র।
তামিলনাড়ুতে কপ্টার দুর্ঘটনায় সেনা সর্বাধিনায়ক (সিডিএস) বিপিন রাওয়তের অকাল প্রয়াণের পরে তাঁর উত্তরসূরি মনোনয়নে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। সরকারি সূত্রে খবর, মূলত দু’জনের নাম উঠে এসেছে আলোচনায়। প্রথম জন, সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ মুকুন্দ নরবণে। দ্বিতীয় জন প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল (অবসরপ্রাপ্ত) আর কে এস ভদৌরিয়া।
পদমর্যাদা এবং সিনিয়রিটির বিচারে সেনা সর্বাধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল রাধাকৃষ্ণণ হরিকুমারও। কিন্তু তিনি নৌসেনার দায়িত্ব নিয়েছেন ৩০ নভেম্বর। তাই এত দ্রুত তাঁকে সরানো হবে না বলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি। বর্তমান বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল বিবেকরাম চৌধুরি দায়িত্ব নিয়েছেন মাত্র আড়াই মাস আগে। তাই তাঁর ক্ষেত্রেও একই যুক্তি প্রযোজ্য। তবে আগামী সপ্তাহেই এ বিষয়ে চূড়ান্তে সিদ্ধান্ত হতে পারে ওই সূত্র জানাচ্ছে।
২০১৯ সালে সেনা বিধি সংশোধন করে সেনা সর্বাধিনায়ক পদের পাশাপাশি সহকারী সেনা সর্বাধিনায়ক (ভাইস চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ) পদও তৈরি করেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বর্তমানে সেই রয়েছেন, বায়ুসেনার এয়ার মার্শাল বলভদ্র রাধাকৃষ্ণ। কিন্তু সিনিয়রিটির বিচার করলে তাঁকে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার প্রধানের মাথায় বসানোর সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, সামরিক রীতি মেনে স্থল, নৌ এবং বায়ুসেনার সর্বাধিনায়ক হিসেবে এমন এক জনকে বেছে নেওয়া প্রয়োজন যিনি পদমর্যাদায় তিন বাহিনীর কোনও একটিতে সর্বাধিনায়ক ছিলেন বা ন্যূনতম ‘ফোর স্টার শ্রেণির’ অফিসার হিসেবে অবসর নিয়েছেন। বলভদ্র এখনও ‘তিন তারা’ জেনারেল।
কপ্টার দুর্ঘটনায় সেনা সর্বাধিনায়ক রাওয়াতের মৃত্যুর পর বুধবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক হয় প্রধানমন্ত্রী মোদীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের বাসভবনে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের পাশাপাশি ওই বৈঠকে হাজির ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। সেখানে দেশের দ্বিতীয় সেনা সর্বাধিনায়ক পদের সম্ভাব্য নাম হিসেবে নরবণে এবং ভদৌরিয়াকে নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
২০১৯ সালে স্বাধীনতা দিবসের বক্তৃতায় স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সমন্বয় বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ‘সিঙ্গল পয়েন্ট অ্যাডভাইজর’ হিসেবে সেনা সর্বাধিনায়ক পদ গঠনের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সংশোধিত সেনা বিধি অনুযায়ী সেনা সর্বাধিনাকের অবসর গ্রহণের বয়স ৬৫। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রয়াত রাওয়ত। তিন বছর কাজ করার পর ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর স্থলসেনা প্রধানের অবসর নেওয়ার কথা ছিল রাওয়তের। তার এক দিন আগে দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক পদে তাঁকে নিযুক্ত করে মোদী সরকার। সে ক্ষেত্রে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নেওয়া ভদৌরিয়াকে ফের ফেরানো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে প্রাক্তন সেনাকর্তাদের।