সফুরা জ়ারগর।—ফাইল চিত্র।
অবশেষে শর্তসাপেক্ষে জামিন পেলেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এমফিল পড়ুয়া সফুরা জ়ারগর।
দিল্লি সংঘর্ষের ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১০ এপ্রিল ২৭ বছরের সফুরা যখন গ্রেফতার হন, তখনই তিনি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওই অবস্থায় ইউএপিএ আইনে তাঁকে তিহাড় জেলে বন্দি রাখা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদে সরব হন জেএনইউ, জামিয়া-সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, সিএএ-এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হওয়ার কারণেই সফুরাকে জেলবন্দি করেছে দিল্লি পুলিশ। ঠিক যে ভাবে এখনও বন্দি করে রাখা হয়েছে মীরন হায়দর-সহ আরও বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে।
তা ছাড়া, তিহাড়ের মতো ঠাসাঠাসি ভিড়ের জেলে তাঁর মতো অন্তঃসত্ত্বাকে করোনার এই সঙ্কটের সময়ে প্রবল ঝুঁকি নিয়েও কেন বন্দি রাখা হচ্ছে, তা নিয়েও বারবার প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, সফুরাদের গ্রেফতার করে প্রতিশোধের রাজনীতি করছে বিজেপি। কারণ দিল্লি সংঘর্ষের মামলায় সফুরা-সহ একাধিক পড়ুয়া এবং সমাজকর্মীকে গ্রেফতার করা হলেও উস্কানিমূলক বক্তৃতা-দেওয়া বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরদের স্পর্শও করেনি অমিত শাহের পুলিশ। অবশেষে মঙ্গলবার জামিন পেলেন সেই সফুরা।
এ দিন দিল্লি পুলিশের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছেন, মানবিকতার খাতিরেই প্রায় ২৩ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা সফুরাকে জামিন দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি করেনি পুলিশ। রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট ঐশী ঘোষ-সহ বিভিন্ন ছাত্র নেতা। কিন্তু একই সঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, এত দিন এই মানবিকতা কেন দেখায়নি দিল্লি পুলিশ? গত কালও এই মেহতাই বা কেন বলেছিলেন যে, শুধু মাত্র গর্ভে সন্তান থাকাটাই সফুরার জামিন পাওয়ার যুক্তি হতে পারে না? আদালতের কাছে জামিনের শর্ত হিসেবে এ দিনও মেহতার আর্জি, যে অভিযোগে সফুরা গ্রেফতার হয়েছিলেন, সে ধরনের কাজে যাতে তিনি আর লিপ্ত না-হন। কোনও রকম সমস্যা যেন না-হয় তদন্তের কাজে। অনুমতি ছাড়া আপাতত পা না-রাখেন দিল্লির বাইরে। জেলে থাকাকালীন সফুরার বরাতে দেশদ্রোহীর তকমাও জুটেছে। বিবাহিতা সফুরা অন্তঃসত্ত্বা জানার পরে গেরুয়া শিবিরের একাংশ নেট দুনিয়ায় তাঁর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলতে ছাড়েনি। সফুরার জামিনের আর্জি খারিজ করতে বারবার সক্রিয় হয়েছে সরকার। ১০ হাজার টাকার বন্ডে আজ জামিন পেলেন সফুরা।