বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।
সব দেশ সব সময় ভারতের সঙ্গে একমত হবে বা ভারতকে সমর্থন করবে, এই ‘গ্যারান্টি’ দেওয়া সম্ভব নয়। ‘রাজনীতি আসলে রাজনীতিই’। ভারত-মলদ্বীপ চাপানউতোর প্রসঙ্গে নাগপুরে একটি কর্মসূচিতে এই কথাই বললেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
সম্প্রতি লক্ষদ্বীপে গিয়ে ছবি পোস্ট করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা নিয়ে কুমন্তব্য করেন মলদ্বীপের তিন মন্ত্রী মালশা শরিফ, মারিয়ম শিউনা, আবদুল্লা মাহজুম মজিদ। তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান ভারতের শাসক দল থেকে বিরোধী নেতা, বিশিষ্ট জনেরা। সমাজমাধ্যমে মলদ্বীপ ‘বয়কটের’ ডাক দেওয়া হয়। এ সবের নেপথ্যে চিনের ‘প্ররোচনা’ও দেখেছেন অনেকে। সেই নিয়েই শুরু হয় দুই দেশের কূটনৈতিক টানাপড়েন। তবে তিন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপও করে মলদ্বীপ সরকার।
অতীতে প্রায় সব সময়েই ভারতের পাশে ছিল মলদ্বীপ। মহম্মদ মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে সম্প্রতি দূরত্ব বেড়েছে। চিনপন্থী মুইজ্জু গদিতে বসার পরই ভারতকে সেনা প্রত্যাহার করতে বলেছিলেন। এখন মলদ্বীপ-ভারত সম্পর্কে টানাপড়েনের সময়ও ফের একবার মলদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলছে মুইজ্জু সরকার।
এই প্রসঙ্গেই শনিবার নাগপুরে একটি কর্মসূচিতে বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘রাজনীতি আসলে রাজনীতিই। আমি কখনওই গ্যারান্টি দিতে পারব না যে, সব দেশে প্রতিদিন প্রত্যেক মানুষ আমাদের সমর্থন করবেন, বা আমাদের পাশে থাকবেন।’’ তবে তিনি মনে করেন, গত ১০ বছর ধরে পৃথিবীর বাকি দেশের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেছে ভারত। জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘‘গত ১০ বছর ধরে আমরা চেষ্টা করছি, যাতে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। এও দেখা হয় যে, কোনও রাজনৈতিক চাপানউতোর তৈরি হলেও যাতে সেই দেশের মানুষের ভারতের প্রতি সুন্দর অনুভূতি থাকে। তাঁরা যাতে বোঝেন যে, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেই চেষ্টাই বরাবর করা হয়েছে।’’
সম্প্রতি চিনের সঙ্গে ২০টি চুক্তি করেছে মলদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রকে পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে বেজিং। বদলে চিনের থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে মলদ্বীপ। যদিও মনে করা হচ্ছে, এর ফলে আখেরে আরও বিপাকে পড়তে চলেছে তারা। চিনের কাছে ক্রমেই হাত-পা বাঁধা পড়তে পারে তাদের। সরাসরি এই নিয়ে মুখ না খুললেও জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, অন্য অনেক দেশে রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি জোগানে সাহায্য করছে ভারত। বিনিয়োগ করছে। তাদের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সাহায্য করছে। তাঁর কথায়, ‘‘কী ভাবে তুমি অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে, এগুলো তারই অংশ।’’