বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি: সংগৃহীত।
বিদেশমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম চলতি রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে ভারতের পূর্ণাঙ্গ প্রতিনিধিত্ব করছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এ বছর ওই অধিবেশনে যোগ দিতে যাননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু নিউ ইয়র্কে মোদীর অনুপস্থিতি মালুম হতে দিচ্ছেন না তাঁর দূত জয়শঙ্কর। এক দিন আগে ভারতের আমেরিকা সংক্রান্ত নীতি প্রণয়নে মোদীর ভূমিকাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন এই প্রাক্তন আমলা। আজ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে সংকলিত গ্রন্থ সম্পর্কে আলোচনা চক্রে মোদী-প্রশংসায় পঞ্চমুখ জয়শঙ্কর। জানালেন, তাঁর এবং মোদীর অনেক অজানা গল্পও।
ইউপিএ জমানায় জয়শঙ্কর যখন চিনে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত, মোদী সে সময় গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে বেজিং সফরে যান। সে সময়েই জয়শঙ্কর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন মোদীর জন্য। গুজরাতে বিনিয়োগ টানার প্রশ্নে যা হয়ে উঠেছিল গুরুত্বপূর্ণ। তখন থেকেই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সুসম্পর্ক জয়শঙ্করের। মোদী জমানাতেই বিদেশ মন্ত্রকের শীর্ষ আমলা হিসাবে অবসর নেওয়ার পর বিদেশমন্ত্রীর পদে উন্নীত করা হয় তাঁকে।
মোদীর কর্তব্যবোধের পরিচয় তুলে ধরতে আজ একটি ঘটনার উল্লেখ করেছেন বিদেশমন্ত্রী। ২০১৬ সালে জয়শঙ্কর বিদেশসচিব থাকাকালীন আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফ শহরে ভারতীয় কনসুলেটে জঙ্গি হামলা হয়। রাতভর চলে গুলি-গ্রেনেডের লড়াই। মাঝরাতে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি ফোন করেন জয়শঙ্করকে। বিস্মিত জয়শঙ্কর শোনেন, মোদী বলছেন, “জাগে হো?” জয়শঙ্কর জানান, ভারতীয় কনসুলেট ভবনে জঙ্গিদমন অভিযান শেষ হলে তাঁকে ফোনে তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলাম, ‘আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। আমি আপনার দফতরে ফোন করে জানিয়ে দেব’। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘না, আপনি আমাকেই ফোন করে জানাবেন’।’’
পাশাপাশি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মোদীর চিন সফরের উল্লেখ করে জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, মোদীর কাজের পারিপাট্য এবং উদ্যম দেখে তিনি মুগ্ধ হয়ে যান। এত ভাল হোম ওয়র্ক করে বিদেশে আসতে তিনি বিশেষ কাউকে দেখেননি বলে জানিয়েছেন। বিদেশমন্ত্রীর কথায়, “মোদী কেন্দ্রের চিন-নীতি সম্পর্কে সে সময়ে আমার কাছে জানতে চেয়ে বলেছিলেন, আমি দেশের নীতির থেকে এক মিলিমিটারও সরব না।” মোদীর বিদেশ নীতি (বিশেষত চিন) নিয়ে বরাবরই তোপ দাগেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আমেরিকায় দাঁড়িয়ে এই চিন-নীতি সংক্রান্ত স্মৃতিকথার উল্লেখ করে কংগ্রেসকে পাল্টা বার্তা দিলেন জয়শঙ্কর—এমনটাই মনে করা হচ্ছে।