ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। — ফাইল চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে ভারতের মধ্যেও যেমন বিরোধিতার সুর চড়া হচ্ছে, তেমনই অনেক দেশই মুখ খুলেছে এই আইন কার্যকর করা নিয়ে। আমেরিকা এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। সেইসঙ্গে সিএএ নিয়ে ‘উদ্বেগ’ও প্রকাশ করেছে তারা। সেই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর প্রশ্ন, ভারতের ইতিহাস কি সবাই বোঝে? জয়শঙ্করের কথায়, ‘‘দেশভাগের সময় যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত এবং হতাশ হয়েছিলেন, তাঁদের প্রতিও আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে।’’ সেই ‘দায়বদ্ধতা’ থেকেই সিএএ চালু বলে দাবি করেন বিদেশমন্ত্রী।
আমেরিকার নাম না নিয়েই জয়শঙ্কর খোঁচা দিয়েছে সে দেশের সরকারকে। ভারতে নিযুক্ত আমেরিকার দূত এরিক গার্সেটি এ দেশের ‘নীতি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তার জবাব দিতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘আমারও নীতি আছে। দেশভাগের সময় যে সব মানুষ ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন, সেই সব মানুষের জন্যই সিএএ।’’ ধর্মের ভিত্তিতে ভাগাভাগি করা হয়েছে সিএএ-তে, এমনও অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘শুধু আমাদের দেশে নয়, অন্য দেশেও ধর্ম এবং জাতির ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়।’’
বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘আমি কারও নীতি বা গণতন্ত্রের আদর্শ নিয়ে কিছু বলছি না। কিন্তু আমার মনে হয়, আমাদের দেশের ইতিহাস সম্পর্কে অনেকের সঠিক ধারণা নেই। বিশ্বের অনেক জায়গা থেকে এমন অনেক মন্তব্য করা হচ্ছে, তা শুনে মনে হচ্ছে ভারতে কোনওদিন দেশভাগ হয়নি। দেশভাগের সময় এমন কোনও সমস্যা হয়নি, যা সিএএ সমাধান করতে পারবে না?’’
গত ১১ মার্চ সিএএ জারি করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যে সব হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্সি, খ্রিস্টানেরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে এসেছেন, তাঁদের এ দেশের নাগরিকত্ব দেওয়া শুরু করা হবে। কেন সিএএ-তে শুধুমাত্র ছ’টি ধর্মের কথা বলা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি। বিরোধীদের দাবি, সিএএ ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘বৈষম্যমূলক’।