ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়ায় চার দেশের অক্ষ কোয়াড-এর বৈঠক সেরে এ বার ফিলিপিন্সে পৌঁছলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, পাখির চোখ সেই একটিই। চিনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক এবং রণকৌশলগত মোকাবিলার জন্য নিজেদের হাত শক্ত করা ও কূটনৈতিক ওজন বাড়ানো— বেজিংয়ের সঙ্গে দর কষাকষির সময় যা কাজে আসবে। সোমবার ফিলিপিন্স পৌঁছে সে দেশের বিদেশমন্ত্রী টেডি লসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন জয়শঙ্কর।
তার পর বিদেশমন্ত্রীর টুইট, “আমরা এক নতুন অংশীদারিতে প্রবেশ করছি, পারস্পরিক জাতীয় নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা যার ভিত্তি। এই দু’টি ক্ষেত্র নিয়েই আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।”
ফিলিপিন্সে আগামী মে মাসে নির্বাচন। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, এ দেশের বর্তমান সরকার গোড়ায় চিনপন্থী রাজনীতি করে নিজেদের হাত পুড়িয়েছে। চিনের কাছে বিপুল ঋণ তৈরি হয়েছে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অন্য বেশ কিছু রাষ্ট্রের পাশাপাশি ফিলিপিন্সকেও কোণঠাসা করেছে বেজিং।
স্বাভাবিক ভাবেই এশিয়ার অন্য বড় দেশ ভারতের দিকে ঝুঁকেছে তারা। তারই ফলশ্রুতি গত মাসেই ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপিন্সকে বিক্রি করেছে নয়াদিল্লি। এ বিষয়ে ৩৭.৫ কোটি ডলারের চুক্তি সই হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। ফিলিপিন্স নৌসেনার কাছে ভারতের এই প্রথম অস্ত্র রফতানি।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিতে চাইছেন যে, ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র ভারত এবং রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি। ভারত এই ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপিন্সের মতো দেশকে দেওয়ার অর্থ, সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্যের বিরুদ্ধে একটি জোরালো সামরিক বার্তা দেওয়া। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা সংলগ্ন অঞ্চলে যখন চিনের সঙ্গে সংঘাত চলছে ভারতের, তখন এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপন্সকে রফতানি করা নিঃসন্দেহে গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তার প্রশ্নেই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এ নিয়ে রাশিয়া এখনও পর্যন্ত একটি বাক্যও উচ্চারণ করেনি।
চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি এক বৈঠকের পরে দু’দেশের সর্বাত্মক সহযোগিতার কথা ঘোষণা করেছেন। অথচ রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে তৈরি ব্রহ্মোসের চিন-বিরোধী কাজে লাগানোর সম্ভাবনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে সতর্ক করেনি মস্কো। বিষয়টিতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে সাউথ ব্লক।
আজ ভারত ফিলিপিন্স বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিত এবং এই ক্ষেত্রে সহযোগিতার দিকটি গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকের আগে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক টুইটে জানায়, “দু’দেশের কর্তারা কথা বলবেন নিরাপত্তা, কোভিড পরিস্থিতি, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে।”