ফাইল চিত্র।
কেউ লিখছেন, সকলেই বাঁচতে চায়! সকলেই ট্রেনে উঠে দূরে চলে যেতে চায়। কেউ আবার লিখছেন, বয়স্কদের ট্রেনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। তার আগেই অল্পবয়সিরা উঠে পড়ছেন। কেউ আবার লিখছেন, এ যেন ঠিক টাইটানিক ডুবে যাওয়ার দৃশ্য! প্রায় সকলেরই লেখায় বাঁচার আর্তি। নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়ার আকুল আবেদন। ইউক্রেনের সরকারি রেল পরিবহণ সংস্থা ইউক্রজ়ালিজ়নিৎসার সোশ্যাল মিডিয়া পেজে গেলে এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে।
ইউক্রেনের পূর্ব এবং উত্তর- পূর্বে রুশ সীমান্ত। রাশিয়া সে দিক থেকেই আক্রমণ শানাচ্ছে। এই সব দিকের রেলপথ রুশ বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত। তাই দেশের পশ্চিম প্রান্তে পোল্যান্ড, রোমানিয়া, হাঙ্গেরি সীমান্তের দিকে ছুটছেন মানুষ। এ ক্ষেত্রে ভরসা রেল পরিষেবা। তবে সীমান্ত যাঁরা পেরিয়েছেন তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, যদি বা ট্রেন পাওয়া যাচ্ছে তাতে ভীষণ ভিড়। অনেকেই ট্রেনে উঠতে পারেননি। প্রচণ্ড ভিড়ের জন্য। নিজেরাই গাড়ির ব্যবস্থা করে সীমান্তে আসতে পেরেছেন। অনেকে হেঁটেই সীমান্তে পৌঁছেছেন। দেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তের সুমিতে থাকা মেডিক্যাল ছাত্রী সিয়োনা গণেশন জানিয়েছেন, সুমির রেল পরিষেবা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে রুশ বাহিনী। তাই ইউক্রেনের পশ্চিম প্রান্তে আসার কোনও সম্ভাবনা তাঁদের নেই।
তবুও বহু মানুষ রেল পরিষেবার খবর নিচ্ছেন সোশ্যাল মিডিয়া পেজে। জানাচ্ছেন তাদের না না অসুবিধার কথা। বারবার জানতে চাইছেন তাঁদের গন্তব্যস্থলে ট্রেন যাবে কিনা। ইউক্রজ়ালিজ়নিৎসার পেজে এ দিন জানানো হয়েছে লিভিভ এবং ইউজহোরোদ অর্থাৎ দেশের পশ্চিম দিকে যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত ট্রেন চালানো হবে। সেই সব ট্রেনে কোনও ভাড়া নেওয়া হবে না।
তবে ট্রেনে চড়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক, শিশু এবং মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। খারকিভ, নিপ্রো, জ়াপোরিজিয়া, ক্রিভিরি থেকে ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে দেশের পশ্চিম প্রান্তে। এই পেজেই এ দিন জানানো হয়েছে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষকে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত অঞ্চল থেকে নিরাপদ জায়গায় ট্রেনে নিয়ে যেতে পারা গিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০ হাজার বিদেশি। বিদেশিদের জন্য বিভিন্ন স্টেশনে ইংরেজি জানা স্বেচ্ছাসেবক রাখা হয়েছে। বিদেশিদের যাওয়ার সুবিধার জন্য থাকছে প্রতি ট্রেনে আলাদা ওয়াগন। রাখা হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাদ্য দ্রব্য। এমনকি নিরামিষ খাবারও রাখা হচ্ছে। ওষুধের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
তবে সব কিছুই ততটা সদর্থক নয়। ইউক্রজ়ালিজ়নিৎসার পেজে ইউক্রেনের বাসিন্দাদের কেউ কেউ বিদেশিদের আলাদা ট্রেনে নিয়ে যাওয়ার দাবিও করছেন।