ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের আবহে রুশ সেনার ট্যাঙ্ক। — ফাইল চিত্র।
ব্রিক্স শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সফরের আগের দিনই বিদেশসচিব বিক্রম মিস্ত্রি জানালেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী থেকে ইতিমধ্যে সরানো হয়েছে ৮৫ জন ভারতীয়কে। রাশিয়ান বাহিনীতে ভারতীয়দের নিযুক্ত করার বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরেই আপত্তি জানাচ্ছিল দিল্লি। গত জুলাই মাসে মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও এই বিষয়টি উঠে এসেছিল। ওই ভারতীয়দের বেআইনি ভাবে বা অন্য কোনও উপায়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হয়ে যুদ্ধের জন্য চুক্তিবদ্ধ করানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁদের দ্রুত রাশিয়ান সেনা থেকে সরানোর জন্য জুলাইয়ের বৈঠকে দাবি জানিয়েছিলেন মোদী।
সোমবার বিদেশসচিব জানান, ইতিমধ্যে রাশিয়ান বাহিনী থেকে ৮৫ জন ভারতীয়কে সরানো হয়েছে। আরও ২০ জন ভারতীয়কে রাশিয়ান সেনা থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রাশিয়ার বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গেও এ বিষয়ে কথাবার্তা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
চলতি বছরের শুরুর দিকেই রুশ সেনায় ভারতীয়দের নিয়োগের বিষয়টি নজরে আসে। গত বছর রুশ সেনার সহযোগী হিসাবে চুক্তিভিত্তিক নিযুক্ত করা হয়েছিল প্রায় শতাধিক ভারতীয়কে। এ ক্ষেত্রে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওই ভারতীয়দের রুশ সেনায় নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকি ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতিতেও তাঁদের ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সরকারি এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রাশিয়ান সেনায় কর্মরত অবস্থায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। রুশ বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় কত জন ভারতীয়ের মৃত্যু হয়েছে, সে তথ্য অবশ্য প্রকাশ্যে আনেননি বিদেশসচিব। তবে একাধিক ভারতীয়ের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র ভারতীয়দের নয়, ইউক্রেনের সঙ্গে সংঘাতের আবহে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের রুশ সেনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। নেপালেরও প্রায় জনা দুশো নাগরিককে রুশ বাহিনীতে যুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা হয়েছিল বলে খবর ছড়িয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যুও হয়েছে বলেও উল্লেখ একাধিক সংবাদমাধ্যমে। অনেকের আবার খোঁজও নেই। বিতর্কের আবহেই জানুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের ভিসার জন্য ‘ওয়ার্ক পারমিট’ দেওয়া সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নেপাল।