প্রতীকী ছবি।
ত্রিপুরা মহারাষ্ট্র হয়ে এবার চেন্নাই। ছেলেধরার গুজব কি ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন রাজ্যে? এবার এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে উঠতে শুরু করেছে। রবিবার ছেলেধরা সন্দেহে চেন্নাইয়ের মোট্রোয় কর্মরত ভিনরাজ্যের দুই ঠিকা শ্রমিককে ধরে পেটালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশি তৎপরতায় তাঁরা এ যাত্রায় প্রাণে রক্ষা পেযেছেন ঠিকই। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছেলেধরা গুজব যে ক’ত ভয়ঙ্কর, তা প্রামাণ করে দিয়েছে রবিবার মহারাষ্ট্রের ধুলে জেলায় পাঁচ জনকে পিটিয়ে মারার ঘটনা।
ধুলে জেলায় যাঁদের পিটিয়ে মারা হয়েছে, তাঁরা সবাই ভিক্ষুক। এবং বহিরাগত। আগেই হোয়াটস অ্যাপে ছড়িয়ে পড়েছিল গুজব, ‘‘৪০০ জন ছেলেধরা বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, কার্বি আংলংসহ দেশের বিঙিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। এরা লোভ দেখিয়ে আপনার শিশুকে তুলে নিয়ে যেতে পারে।’’ পুলিশের ধারণা, এই গুজবেরই বলি হতে হয়েছে পাঁচ নিরপরাধ ভিক্ষুককে। এরা শোলাপুর এলাকা থেকে ভিক্ষা করতে গিয়েছিলেন ধুলের রাইপদা গ্রামে। পুলিশ আসার আগেই তাংদের পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু গুজবে যেমন রাশ টানা যায়নি। ছেলেধরা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে তামিলনাড়ু, অসম, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, গুজরাটসহ বিভিন্ন রাজ্যে। অনেকেই বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে স্থানীয় এবং বহিরাগতদের মধ্যে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা চলছে। অপরিচিত কাউকে দেখলেই এলাকার মানুষ ধরে নিচ্ছেন, তারা ছেলেধরা।
আরও পড়ুন: ছেলেধরা গুজবে এবার মহারাষ্ট্রে গণপিটুনির বলি পাঁচ
সোমবারও গণপ্রহারের ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রের মালেগাঁও এলাকায়। ছেলেধরা সন্দেহে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে প্রকাশ্যে পেটানো হয়েছে। তবে পুলিশ সময়মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছনোয় তাঁরা প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। কিন্তু একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে দেশের বিঙিন্ন রাজ্যে। আসমের গুয়াহাটিতে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে মারধর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ছেলেধরা সন্দেহে ত্রিপুরার দুই আলাদা জায়গায় পিটিয়ে মারা হয়েছে দু’জনকে। যাঁদের মধ্যে একজন ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। গত মাসে অসমের কার্বি আংলং-এ বেড়াতে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রহারে মরতে হয়েছে দু’জনকে। সন্দেহ করা হয়েছিল, তাঁরাও ছেলেধরা।েপ্রাশাসনের তরফ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কিন্তু সে আবেদনে কাজ হচ্ছে না বহুক্ষেত্রেই।