কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপির একসুর! বিধানসভার জোড়া উপনির্বাচন স্থগিত করার দাবিতে এমন বেনজির ঐক্য দেখছে কেরল।
বিহারের বিধানসভা ভোটের সঙ্গেই আগামী নভেম্বরের শেষ দিকে দেশ জুড়ে ৬৫টি আসনে উপনির্বাচন করাতে চাইছে নিবার্চন কমিশন। উপনির্বাচনের পরিকল্পনা বাতিল করার দাবি জানিয়ে কমিশনের কাছে একসঙ্গে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেরলের শাসক ও বিরোধী পক্ষ। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ডাকা সর্বদল বৈঠকে এই মর্মেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের যুক্তি, কেরলে বিধানসভার মেয়াদ ফুরোবে আগামী এপ্রিলে। তার আগেই নির্বাচনী আচরণবিধি জারি হয়ে যাওয়ার কথা। হাতে-কলমে মাত্র মাসতিনেকের জন্য খরচা করে এবং করোনা-জনিত পরিস্থিতির মধ্যে উপনির্বাচন করে কী লাভ?
কেরলে কুট্টানাড ও চাভারা বিধানসভা কেন্দ্র ছিল শাসক এলডিএফের দখলে। দুই বিধায়কের মৃত্যুতে আসনদু’টি এখন শূন্য। শাসক এলডিএফ এবং প্রধান বিরোধী ইউডিএফ, কেউই এখন ওই দুই আসনে উপনির্বাচন চাইছে না। বিজেপির মতও একই। কেরলে পঞ্চায়েতের নির্বাচনও হওয়ার কথা নভেম্বরে। বিজেপি অবশ্য চায় সেই ভোট নির্ধারিত সময়েই হোক, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ চায় ভোট পিছিয়ে দেওয়া হোক। এই ক্ষেত্রে শাসক এলডিএফের মত, ভোটের তারিখ পিছোতে পারে। কিন্তু স্থানীয় নির্বাচন একেবারে বন্ধ রাখা উচিত হবে না।
সর্বদল বৈঠকে আলোচনার পরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন বলেছেন, ‘‘নভেম্বরে যদি ভোট হয়, নির্বাচিত বিধায়কেরা মাত্র তিন মাস পুরো পাবেন কাজের জন্য। এই সামান্য সময়ের জন্য উপনির্বাচন অপ্রয়োজনীয়। সর্বদল বৈঠকের এই মত জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানানো হবে।’’ বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের রমেশ চেন্নিতালারও বক্তব্য, ‘‘দু’টি আসনের ফলাফলের উপরে বিধানসভার সমীকরণে কোনও প্রভাব পড়বে না। শাসক বা বিরোধী, যে-ই জিতুক। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই উপনির্বাচন একেবারেই দরকারি নয়।’’ কেরলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) টিকা রাম মীনা অবশ্য বলেছেন, উপনির্বাচন চাই না, এই কথা আরও আগেই রাজ্যের দলগুলি কমিশনকে জানাতে পারত। এখন দাবি শুনে জাতীয় নির্বাচন কমিশনই ঠিক করবে, কী করণীয়। কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানার আগে ইউডিএফ এবং এলডিএফ অবশ্য প্রার্থী বাছাই সেরে রাখছে।
তবে স্থানীয় ভোটের প্রশ্নে সব দলের একই রকম ঐকমত্য নেই। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নের মতে, ‘‘কয়েক মাসের জন্য বিধানসভার উপনির্বাচন আর পাঁচ বছরের জন্য স্থানীয় নির্বাচন— দু’টো এক নয়। তাই স্থানীয় নির্বাচন বন্ধ রাখা যাবে না। করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভোটের নির্ঘণ্ট ঠিক করার জন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আর্জি জানানো হবে।’’