শাসক ও বিরোধী উভয় পক্ষের হি হট্টগোলে দফায় দফায় মুলতুবি হয়ে যায় লোকসভার অধিবেশন। —ফাইল ছবি
যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন, শাসক বিরোধী উভয়ের স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস থেকে শুরু করে হই হট্টগোল, ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ— কোনও কিছুই বাদ গেল না। আর তার জেরে দিনভর রাফাল আঁচে পুড়ল সংসদ। দফায় দফায় মুলতুবির জেরে সোমবার কোনও কক্ষেই কার্যত কোনও কাজ হল না। অধিবেশন পণ্ড হওয়ার দায় কার, তাই নিয়ে চলল চাপানউতরের রাজনৈতিক খেলা।
যেন অধিবেশন শুরু হওয়ার অপেক্ষা ছিল। ‘রণক্ষেত্রে’ নামার পূর্ণ এবং পূর্ব প্রস্তুতি নিয়েই রেখেছিল দু’পক্ষ। অধ্যক্ষ শুরুর সঙ্কেত দিতেই ‘যুদ্ধবিমান’ নিয়ে কার্যত বোমা ফেলতে শুরু করল শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষ। লোকসভায় বিজেপি তথা এনডিএ শরিকদের দাবি, রাফাল নিয়ে অসত্য তথ্য দিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন রাহুল গাঁধী। দেশবাসীকে ভুল বুঝিয়েছেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দিলেন হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর থেকে নির্বাচিত বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর। কিন্তু যতক্ষণ অধিবেশন চালু ছিল, ততক্ষণই বিজেপি এবং এনডিএ শরিকদলগুলির সাংসদরা হইচই করেছেন ‘রাহুল গাঁধী মাফি মাঙ্গো’— এই স্লোগান তোলে।
কংগ্রেস-সহ অধিকাংশ বিরোধী দলের দাবিও প্রায় একই। রাফাল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ভুল তথ্য দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী তথা সরকার। এই নিয়ে হই হট্টগোল, স্লোগান, শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদরা। তাঁদের পক্ষ থেকেও মোদীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস আনা হয়। রাজ্যসভাতেও একই অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেয় কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, প্রধানমন্ত্রী কেন শীর্ষ আদালতে ভুল তথ্য দিলেন, তার ব্যাখ্যা তাঁকেই দিতে হবে।
আরও পড়ুন: শিখ দাঙ্গার কাঁটা নিয়েই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মুকুট পরলেন কমল নাথ
এর সঙ্গে ছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠনের দাবি। ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশনের কাছ থেকে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ আগেই ছিল। সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের দাবি খারিজ করে দিলেও কংগ্রেস এবং বিরোধীদের দাবি, যৌথ সংসদীয় কমিটি গড়ে তদন্ত করতে হবে। সংসদের উভয় কক্ষেই সেই দাবিতে ব্যাপক হই হট্টগোল শুরু করেন বিরোধীরা। ওয়েলে নেমে চলতে থাকে স্লোগান, বিক্ষোভ। তার মধ্যেই লোকসভায় একমাত্র এলজিবিটি বিল পাস ছাড়া আর কোনও আলোচনাই কার্যত হয়নি। রাজ্যসভার অবস্থা ছিল আরও খারাপ।
আরও পডু়ন: তিন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীর শপথে বিরোধী জোটের হাওয়া, নেই শুধু মায়া-মমতা-অখিলেশ
দিনের শেষে দেখা যায়, ১১টায় লোকসভার অধিবেশন ১১টা থেকে ১১.২৪ মিনিট পর্যন্ত, ১২টা থেকে ১২.২৪, দুপুর দু’টো ২.৪৮ এবং তিনটে থেকে কিছুক্ষণ চলার পরই দিনের মতো মুলতুবি করে দেন স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। আর রাজ্যসভায় সারা দিনে কাজ হয়েছে মাত্র ১২মিনিট। অধিবেশন শুরুর ১২মিনিট পরই দিনের মতো অধিবেশন মুলতুবি করে দেন চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু।