—ফাইল চিত্র।
সনিয়া গাঁধীর সক্রিয়তায় রাজ্যসভায় এক পা পিছোল মোদী সরকার।
মনমোহন সিংহের জমানায় তথ্যের অধিকার আইন তৈরির নেপথ্যে ছিলেন সনিয়াই। কিন্তু মোদী সরকার সেই বিল লঘু করে দু’দিন আগে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে লোকসভায় তা পাশ করিয়ে নেয়। গত কালই তা নিয়ে বিবৃতি জারি করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সনিয়া। আজ সকালে বৈঠক ডেকে দলের সাংসদদের নির্দেশ দেন, কোনও অবস্থাতেই যাতে রাজ্যসভায় এটি পাশ না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে হবে। সব বিরোধী দলকে এ ব্যাপারে একজোট করতে হবে।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ সব দলের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুরে সংসদ ভবনে কংগ্রেস দফতরে সব বিরোধী দলের বৈঠক ডাকেন সনিয়া নিজে। কিন্তু তৃণমূল, এসপির মতো দল কংগ্রেসের দফতরে গিয়ে বৈঠক করতে চায়নি। ফলে বৈঠক আজাদের ঘরে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেখানে ঠিক হয়, তথ্যের অধিকার, তিন তালাক, বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ, শ্রমিকদের নিরাপত্তা-স্বাস্থ্য-কাজের অবস্থা ইত্যাদি সংক্রান্ত সাতটি বিল যে কোনও মূল্যে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে হবে। বিরোধীদের আক্রমণাত্মক মেজাজ বুঝে সরকার স্থির করে, তালিকাভুক্ত থাকলেও আজ তথ্যের অধিকার বিলটি রাজ্যসভায় আনা হবে না। আনা হবে কাল। সেই বিল পাশের জন্য হুইপ জারি করেছে শাসক শিবির। বিল ঠেকাতে পাল্টা হুইপ দিয়েছে বিরোধীরাও। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, তথ্যের অধিকার বিল পাশ করাতে সনিয়ার সাহায্য চাইবে সরকার।
গুলাম নবি আজাদ থেকে তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ বলেন, কেন্দ্রের পাশাপাশি এই বিলের মাধ্যমে রাজ্যের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সে কারণে এই বিল রাজ্যসভার সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হোক। বিরোধীদের ঘরোয়া আলোচনায় তৈরি করা একটি প্রস্তাব আজ সরকারের কাছে পাঠানো হয়। তাতে জানানো হয়েছে, সাতটি বিল সিলেক্ট কমিটিতে পাঠাতে হবে।
আরও ২৫টির মতো বিল পাশের জন্যই সংসদের অধিবেশন বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার। অমিত শাহ গত কাল বিজেপি সাংসদদের বলেছেন, দিনে দু’টি করে বিল পাশ করতে হবে বাড়তি দুই সপ্তাহে। অথচ সরকারের কাছে সমস্যা হল, রাজ্যসভায় এখনও তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। নির্দল ও মনোনীতদের পাশাপাশি বিজেডি, টিআরএস, ওয়াইএসআর-এর মতো ‘বন্ধু’ দলের সমর্থন দরকার। কিন্তু বিজেডি এবং টিআরএস-ও তথ্যের অধিকার বিলের বিরোধী।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘রাজ্যসভা সরকারের কাজ রোখার জন্য নয়। আর এত দিন তো বছরে একশো দিন অধিবেশন চালানোর দাবি তুলত বিরোধীরা। অধিকাংশ বিলই আনা হচ্ছে, যা অতীতে বাতিল হয়ে গিয়েছে।’’ তবে মুখে এ কথা বললেও সরকারকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে, রাজ্যসভার ঘুঁটি কী করে সাজানো যায়।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।