ছবি: পিটিআই।
কী ভাবে ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’-কে চিহ্নিত করা হল! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং-কে শিক্ষা দিন’ বলে ডাক দেওয়ার পরেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে তথ্যের অধিকার আইনে এই জবাব চাওয়া হয়েছে। আরটিআই-কর্মী সাকেত গোখলের প্রশ্ন চারটি। এক, কী ভাবে টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং-কে চিহ্নিত করা হল? দুই, এই গ্যাং মোকাবিলায় কোনও প্রক্রিয়া বা ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিয়োর (এসওপি)’ রয়েছে কি না। তিন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য কি পুলিশ বা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে করা হয়েছে? চার, কোন আইনে তিনি এই গ্যাং-কে শিক্ষা দিতে চান?
প্রশ্নগুলি আপাত ভাবে হেসে উড়িয়ে দেওয়ার মতো শোনালেও, একই রকমের প্রশ্নের মুখে পড়ে অস্বস্তিতে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ২০১৭-তে গুজরাত বিধানসভার প্রচারের শেষ পর্বে খোদ নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ তুলেছিলেন, পাকিস্তান গুজরাতের ভোটে প্রভাব খাটাতে চাইছে। অভিযোগ প্রমাণ করতে কংগ্রেস নেতা মণিশঙ্কর আইয়ারের বাড়িতে পাকিস্তানের কূটনীতিকদের সঙ্গে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহর বৈঠকের উল্লেখ করেন তিনি। এর পরে সাকেত প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে তথ্যের অধিকার আইনে জানতে চান, কোথা থেকে প্রধানমন্ত্রী পাকিস্তানের প্রভাব খাটানোর তথ্য পেয়েছেন? জবাবে প্রধানমন্ত্রীর দফতর জানিয়েছিল, কোনও রেকর্ডে এমন তথ্য নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর ওই বিবৃতির সূত্র নানা সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যম।
আরও পড়ুন: জামিয়াতেও কাঠগড়ায় উঠল পুলিশ
এতে প্রশ্ন ওঠে, রেকর্ড ছাড়া বেসরকারি সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী কী ভাবে এত বড় অভিযোগ তোলেন? রাজ্যসভায় প্রয়াত অরুণ জেটলি এ বিষয়ে মনমোহনের কাছে কার্যত দুঃখপ্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়নি।’’ তত দিনে অবশ্য গুজরাতে বিজেপির জয় হয়ে গিয়েছে। এ বার দিল্লির বিধানভোটের আগে অমিত শাহ টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং-এর প্রসঙ্গ তুলে জাতীয়তাবাদ ও মেরুকরণের রাজনীতি করতে চাইছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভের সময় বিজেপি প্রথম ছাত্রনেতাদের ‘টুকড়ে টুকড়ে গ্যাং’ আখ্যা দেয়। কংগ্রেসের সঙ্গে ওই গ্যাং-এর যোগ রয়েছে বলেও বিজেপির অভিযোগ। জেএনইউ-র প্রাক্তন ছাত্র নেতা কানহাইয়া কুমারের মন্তব্য, ‘‘আজ যাঁরা তরুণদের আজাদির স্লোগানে উদ্বিগ্ন, তারা অতীতে স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্দোলনেও উদ্বিগ্ন ছিলেন। এরা আজ সংবিধানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।’’