প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে ‘হিন্দু মন জাগ্রত করতে’ গ্রামে গ্রামে পৌঁছবে আরএসএস এবং তার বিভিন্ন শাখা সংগঠন। আরএসএস সূত্রে খবর, ‘অযোধ্যার রামমন্দির শুধু মন্দির নয়, হিন্দু রাষ্ট্রের প্রতীক’ — এমন প্রচার করা হবে ১৫- ৩১ জানুয়ারি, গ্রাম সম্পর্ক অভিযানের মাধ্যমে।
আজ থেকে আমদাবাদে শুরু হয়েছে আরএসএসের বার্ষিক সম্মেলন। অযোধ্যায় রামমন্দিরের জন্য অর্থসংগ্রহ অন্যতম প্রধান আলোচ্য বিষয়। বিজেপি ও আরএসএসের এই ‘সমন্বয় বৈঠক’-এ যোগ দিতে বিজেপির সভাপতি জে পি নড্ডা, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ এখন আমদাবাদে। বৈঠকে মোদী সরকারের মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ ও রদবদল নিয়েও বিজেপি এবং সঙ্ঘ নেতৃত্বের মধ্যে মত বিনিময় হতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের মতো যে রাজ্যগুলিতে বিধানসভা ভোট আসন্ন, তা নিয়েও আলোচনা হবে।
বৈঠকে রয়েছেন সংগঠনের দায়িত্ব প্রাপ্ত বিজেপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রকাশ। তিনি বঙ্গের দায়িত্বেও। শিবপ্রকাশের মতো যে সব আরএসএস প্রচারক বিজেপির সংগঠনে কাজ করছেন, দলের সভাপতি নড্ডা সম্প্রতি তাঁদের দায়িত্বে রদবদল করেছেন। তার ফলে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আরএসএস প্রচারকদের জন্য আরও জায়গা খালি হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, আরএসএস থেকে আরও কয়েক জন প্রচারক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। রামমন্দির নিয়ে প্রচার এবং চাঁদা তোলার জন্য তৈরি হয়েছে ‘রামমন্দির তীর্থক্ষেত্রে নিধি সমর্পণ অভিযান সমিতি’। সঙ্ঘের পশ্চিমবঙ্গের প্রান্ত প্রচার প্রমুখ বিপ্লব রায় বলেন, “উত্তর এবং দক্ষিণ বঙ্গ মিলিয়ে প্রায় ৩৯ হাজার গ্রামের ৩৩ হাজার গ্রামে পৌঁছনোর লক্ষ্য রয়েছে। গ্রামগুলির ৭০ শতাংশ পরিবারে যাওয়া হবে। দশ টাকা থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা নেওয়া এবং রামমন্দির সম্পর্কে সচেতনতা গড়া আমাদের লক্ষ্য।’’
প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে ‘অবাধে অনুপ্রবেশ’ ঘটিয়ে রাজ্যের বর্তমান শাসক দল হিন্দুদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে বলেও প্রচার করবে আরএসএস। তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়ের প্রশ্ন, ‘‘আরএসএস তো অরাজনৈতিক সংগঠন। তাদের সম্মেলনে বঙ্গের ভোট নিয়ে কী ভাবে আলোচনা হয়?’’
সূত্রের বক্তব্য, ‘বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি এবং সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে ছ’জন আল কায়দা জঙ্গিকে গ্রেফতার যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি করেছে। সঙ্ঘ পরিবারের সমস্ত শাখাকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, এ ব্যাপারে রাজ্যে প্রচার শুরু করতে। ডুয়ার্স, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় প্রচারে জোর দিতে চলেছে সঙ্ঘ।’ সুখেন্দুবাবুর মন্তব্য, ‘‘মন্দিরের চাঁদা তোলার নামে যাতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি না ছড়ায়, তা রাজ্যকে দেখতে হবে।’’