রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত। ছবি: সংগৃহীত।
শুধু একতরফা উদ্যোগে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি হবে না। হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের আবহ গড়ে তুলতে হলে সক্রিয় হতে হবে উভয় পক্ষকেই। আর সে ক্ষেত্রে নিজেদের ‘জাতীয় পরিচয়কে’ সামনে রেখে এগোতে হবে বলে জানালেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত। মহারাষ্ট্রের নাগপুরে সঙ্ঘের সদর দফতরে আয়োজিত প্রশিক্ষণ পর্বের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাগবতের দাবি, ‘‘অতীতের কিছু উদাহরণ আর অহংবোধই হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের পথে বড় বাধা।’’
গত বছর দশমীর দিনে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাদিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় ভাগবত বলেছিলেন, ‘‘হিন্দুরা সংগঠিত হচ্ছে বলে ভারতের ‘তথাকথিত সংখ্যালঘু’-দের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই— সঙ্ঘের থেকে অতীতেও মুসলমানদের কোনও বিপদ হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।’’ কিন্তু সেই আশ্বাসবাণীর পাশাপাশি ওই বক্তৃতাতেই ভাগবত জনসংখ্যা নীতির কথা বলেছিলেন।
জানিয়েছিলেন, সেই নীতি সব সম্প্রদায়ের জন্য সমান ভাবে প্রযুক্ত হওয়া প্রয়োজন, যাতে ভারতের জনসংখ্যায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের অনুপাত অপরিবর্তিত থাকে। না হলে, তা দেশের অখণ্ডতার পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে।
সেই ‘ক্ষতির’ উদাহরণ দিতে গিয়ে ভারতভাগ থেকে শুরু করে পূর্ব টিমোর, দক্ষিণ সুদান, কসোভোর মতো ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের উদাহরণও দিয়েছিলেন তিনি। ভাগবতের ওই বক্তৃতার পরেই অভিযোগ উঠেছিল, ‘মুসলমানদের জনসংখ্যা বেড়ে চলেছে, এবং তা অখণ্ড ভারতের পক্ষে বিপজ্জনক’ বলে বার্তা দিতে চেয়েছিলেন তিনি।
শুক্রবারের বক্তৃতায় অবশ্য ভাগবতের দাবি, মুসলিমরা বহু বছর ধরে ভারতে নিরাপদেই রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ দূর হতে পারে।’’ সেই সঙ্গে তাঁর ইঙ্গিত, ভারতীয় মুসলিমদের ‘বহিরাগত’ বলে মনে করে না সঙ্ঘ। ভাগবতের কথায়, ‘‘বহিরাগতেরা এসেছিলেন। আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে লড়েছি। এখন কোনও বহিরাগত নেই। যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা সকলেই অন্দরের মানুষ।’’