তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধি। —ফাইল চিত্র।
সনাতন প্রথা নিয়ে নিজের মন্তব্য থেকে পিছু হটা তো দূর, বরং অবস্থান আরও কঠোর করলেন ডিএমকে নেতা তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের পুত্র উদয়নিধি। নিজের মন্তব্যের সপক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং ‘মহাভারত’-কে টেনে এনেছেন তিনি। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সূত্রের খবর, আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সনাতন প্রথা নিয়ে উদয়নিধির মন্তব্যের ‘উপযুক্ত জবাব’ দিতে হবে।
আজ বিষয়টি নিয়ে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরব হয়েছিলেন। মন্ত্রিসভার সদস্যদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে সকলকে জবাব দিতে হবে। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, ‘‘উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন সনাতন ধর্ম নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে, তা আমাদের ধর্মের অবমাননা। সকলে মিলে দায়িত্ব নিয়ে এর উপযুক্ত জবাব দিতে হবে।’’
বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দাবি করেছেন, উদয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলে রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। আজও নিজের অবস্থানে অনড় থেকে তিনি জানিয়েছেন, ওই মন্তব্যের জন্য তিনি যে কোনও ধরনের আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে তৈরি। সনাতন ধর্মে সামাজিক বঞ্চনার উদাহরণ দিতে গিয়ে আজ স্ট্যালিন-পুত্র বলেন, ‘‘নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এটাই সনাতন ধর্মের বৈষম্যের উদাহরণ।’’ বিজেপি অবশ্য এই অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে।
এখানেই থেমে থাকেননি উদয়নিধি। শিক্ষক দিবসে এক্স হ্যান্ডলের পোস্টে সনাতন ধর্মের বঞ্চনার উদাহরণ দিতে গিয়ে ‘মহাভারত’-এর দ্রোণাচার্য ও একলব্যের উদাহরণ টেনে এনেছেন তিনি। তিনি লিখেছিলেন, ‘আমাদের শিক্ষকেরা পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভাবেন। দ্রাবিড় আন্দোলন এবং শিক্ষকদের মধ্যে পবিত্র সম্পর্ক। সেখানে কেউ বৃদ্ধাঙ্গুলি চাইতেন না’। সনাতন ধর্ম সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য উত্তরপ্রদেশের রামপুরে স্ট্যালিন-পুত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে।
উদয়নিধির মন্তব্যের ‘উপযুক্ত জবাব’ দেওয়ার কথা বললেও ‘ইন্ডিয়া’ বিতর্কে মন্ত্রীদের মুখ না খোলার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা ছাড়া যেন অন্য কেউ বিষয়টি নিয়ে কথা না বলেন। সূত্রের খবর, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর জি২০-র রাষ্ট্রনেতাদের নৈশভোজে ৫টা ৫০ মিনিটের মধ্যে সকলকে হাজির হতে হবে সংসদ ভবনে। সাড়ে ৬টার মধ্যে নৈশভোজস্থলে হাজির হতে হবে। যানজট এড়াতে মন্ত্রীদের একটি বাসে আসার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।