তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি এবং মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন। — ফাইল চিত্র।
এক অনুষ্ঠানে তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীত থেকে বাদ গেল ‘দ্রাবিড়’ শব্দ। আর তা নিয়ে ফের তরজায় জড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ও রাজ্যপাল আর এন রবি।
আজ দূরদর্শনের চেন্নাইয়ের দফতরে এক অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন রাজ্যপাল আর এন রবি। সেখানে রাজ্য সঙ্গীত ‘তামিল থাই ভাজ়থু’ গানটি গান এক দল শিল্পী। গানটিতে দ্রাবিড়ভূমির সম্মানে থাকা একটি লাইন বাদ যায়।
এর পরেই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দাবি করেন, গানটি থেকে ‘দ্রাবিড়’ শব্দ বাদ যাওয়া রাজ্য ও তামিল ভাষার পক্ষে অবমাননাকর। তাঁর প্রশ্ন, রাজ্যপাল কি জাতীয় সঙ্গীত থেকেও দ্রাবিড় শব্দ বাদ দেবেন? তাঁর মতে, কেন্দ্রের উচিত এখনই রবিকে রাজ্যপালের পদ থেকে সরানো। কারণ, তিনি ‘দ্রাবিড় অ্যালার্জিতে’ ভুগছেন।
স্ট্যালিনের বক্তব্য, ‘‘ওই সঙ্গীত থেকে দ্রাবিড় শব্দটি বাদ দেওয়া বেআইনি। যিনি আইন মানেন না তিনি ওই পদে থাকার অযোগ্য।’’
জবাবে আর এন রবির দফতর জানিয়েছে, রাজ্যপাল কেবল ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ওই শব্দ সঙ্গীত থেকে বাদ যাওয়ায় তাঁর কোনও ভূমিকা নেই। যে শিল্পীরা গানটি গাইছিলেন তাঁরা ভুল করে ওই শব্দটি বাদ দিয়ে ফেলেন। তখনই উদ্যোক্তাদের বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করা হয়। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করতে বলা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে রাজ্যপালের দাবি, ‘‘স্ট্যালিন আমার বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন। তামিল থাই ভাজ়থুকে অপমান করার ভুয়ো অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ভাল করেই জানেন আমি প্রত্যেক অনুষ্ঠানে গর্বভরে ওই সঙ্গীত গেয়ে থাকি।’’
রবির আরও দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্র যে তামিল ভাষা প্রসারের জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন তাও মুখ্যমন্ত্রী জানেন। রাজ্যপালের কথায়, ‘‘গর্বিত ভারতবাসী হিসেবে আমি নিজে প্রাচীনতম জীবিত ভাষা তামিল অন্য রাজ্যে প্রসারের জন্য উদ্যোগী হয়েছি। সম্প্রতি গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অসম সরকারের সহায়তায় একটি তামিল ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা হয়েছে।’’
দূরদর্শনের তরফেও তামিলনাড়ুর রাজ্য সঙ্গীতে ‘অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি’ নিয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করা হয়েছে।
কিন্তু তাতে বিতর্ক থামছে না। ‘দ্রাবিড়’ শব্দ বাদ যাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন অভিনেতা-রাজনীতিক কমল হাসনও। তাঁরও দাবি, ‘‘দ্রাবিড় শব্দটি জাতীয় সঙ্গীতেরও অংশ। তাই রাজ্য সঙ্গীত থেকে ওই অংশটি বাদ দিয়ে গাওয়া রাজনীতির অঙ্গ। এটা তামিলনাড়ুর অপমান।’’