বাঙালির পাতে আলু-পোস্তর সঙ্গে কলাইয়ের ডাল আসবে মোজাম্বিক থেকে। কিন্তু মোজাম্বিকের ডাল হলেও স্বাদে-গন্ধে কোনও ফারাক বোঝা যাবে না। সেই গ্যারান্টি দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বস্তুত দেশের মানুষের খাবারের থালায় ভাত-রুটির সঙ্গে সস্তায় ডালের জোগান সুনিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী এ সপ্তাহেই মোজাম্বিক যাচ্ছেন।
এ দেশে যে পরিমাণ ডাল খাওয়া হয়, সেই পরিমাণ ডাল উৎপাদন হয় না। ফলে অভাব মেটাতে প্রতি বছরই বিভিন্ন দেশ থেকে ডাল আমদানি করতে হয় সরকারকে। তার মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলি অন্যতম। কিন্তু সমস্যা হল, আফ্রিকায় যে ডালের চাষ হয়, তা মুসুরই হোক বা অড়হর, তার স্বাদ দেশের মাটিতে চাষ হওয়া ডালের স্বাদের সঙ্গে মেলে না।
এখানেই ডাল-কূটনীতির চাল চেলেছে মোদী সরকার। মোজাম্বিকে গিয়ে সরকারের কর্তারা বুঝিয়ে এসেছেন, সে দেশে নির্দিষ্ট পরিমাণ ডালের চাষ হবে শুধুই ভারতে রফতানির জন্য। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় স্বাদ অনুযায়ীই ডালের চাষ করতে হবে। প্রয়োজনে তার বীজ ও অন্যান্য প্রযুক্তি জোগাবে ভারত সরকার। এ ব্যাপারে নয়াদিল্লির সঙ্গে মোজাম্বিকের সরকারি চুক্তি হবে।
আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সেই চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। বৃহস্পতিবার, ৭ জুলাই থেকে আফ্রিকা সফর শুরু করছেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম আফ্রিকা সফর। মোজাম্বিক, দক্ষিণ আফ্রিকা, তানজানিয়া, কেনিয়ায় যাবেন মোদী। কিন্তু তাঁর প্রথম গন্তব্যই হবে মোজাম্বিক। তখনই এই চুক্তিতে দুই দেশ সই করবে। মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘‘এ দেশের সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা মোজাম্বিক সরকারের থেকে ডাল কেনার জন্য দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করবে। এ বছর মোজাম্বিক ভারতে এক লক্ষ টন ডাল পাঠাচ্ছে। ২০২০-র মধ্যে তা দুই লক্ষ টনে নিয়ে যেতে চাইছি আমরা।’’ ডালের দাম লাগামছাড়া হওয়ায় গত কয়েক মাসে বিরোধীদের প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে মোদী সরকার। রবিশঙ্করের দাবি, ‘‘এই চুক্তির ফলে ডালের দামও ওঠানামা করবে না। ডালের স্বাদও একইরকম থাকবে।’’
গত আর্থিক বছরে এ দেশে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টন চাল উৎপাদন হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ডালের চাহিদা মেটাতে প্রায় ৫৮ লক্ষ টন ডাল আমদানি করতে হয়েছিল। তাতেও ডালের পুরো চাহিদা মেটানো যায়নি। ফলে দাম বেড়েছিল। মোজাম্বিক থেকে শুরু করে এ বার অন্যান্য দেশের সঙ্গেও একই ধরনের ডাল-চুক্তি করার বিষয়ে আলোচনা করছে মোদী সরকার।
আরও পড়ুন