ফাইল চিত্র।
অবশেষে কেন্দ্রের কানে পৌঁছাল রোহিঙ্গা কিশোরীর কান্না। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নিয়েছে, শিলচরের হোমে বেড়ে ওঠা ওই কিশোরীকে আর মায়ানমারে পাঠানো হবে না। বরং হায়দরাবাদে যদি তার কাকা থাকেন এবং তিনি দায়িত্ব নিতে রাজি হন, তাহলে তাঁর কাছেই রাখা হবে তাকে। কাছাড়ের পুলিশ সুপার রমনদীপ কৌর বলেন, "আমরা বাংলাদেশে তার বাবার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। তাঁর কাছ থেকে নিশ্চিত হতে চাই, হায়দরাবাদে ষোল বছরের কিশোরী নিরাপদেই থাকবে।" কৌর জানান, নইলে আঠারো বছর হলে হোম থেকে তাকে ডিটেনশন সেন্টারে পাঠানো হবে।
২০১৯ সালে শিলচরের রংপুরে জাতীয় সড়কের পাশে অচেতন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল চোদ্দ বছরের এই কিশোরীকে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে শিলচরের নিবেদিতা নারী সংস্থায় পাঠায়।
তার মা-বাবা বাংলাদেশের কক্সবাজার শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। সেও সেখানেই ছিল। এক দিন বাবা মালয়েশিয়ার এক যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে দেন। মোবাইলে তারা 'নিকাহ কবুল' করে। এর পরেই দালালের মাধ্যমে তাকে মালয়েশিয়া পাঠানো হচ্ছিল। সে জানায়, পথে এক দিন রাতে তাকে কিছু খাইয়ে অচেতন করে দেওয়া হয়। পরের দিন জ্ঞান ফিরলে
জানতে পারে, সে শিলচরে।
সংশ্লিষ্ট হোমের সচিব দিবা রায় জানিয়েছেন, হোমে পাঠানোর পরেই তাকে প্রত্যর্পণের জন্য লেখালেখি শুরু হয়। মায়ানমার সরকার তাকে গ্রহণেও সম্মত হয়। সে অনুসারে গত বছরের ১ এপ্রিল অসম পুলিশ কিশোরীটিকে নিয়ে যায় মণিপুরের মোরে সীমান্তে। কিন্তু মায়ানমার রক্ষীরা গেট খোলেননি। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক ভারত সরকারকে সম্মতিসূচক চিঠি পাঠালেও তাদের কিছুই জানায়নি। বাধ্য হয়ে অসম পুলিশ তাকে নিয়ে ফিরে আসে। সিদ্ধান্ত হয়, আরও এক বছর তাকে হোমেই রাখা হবে। তার পরে মেয়েটির পরিস্থিতি ও মায়ানমারে ফিরে যাওয়ার অনিচ্ছার কথা জেনে গত সপ্তাহে কেন্দ্র নির্দেশ দেয়, তাকে যেন আর মায়ানমারে পাঠানো না হয়।