RLD

UP assembly election 2022: ‘হাওয়া খারাপ’, সভা বাতিলে তির মোদীকে

বিজনৌরের সভা বাতিল করে ভার্চুয়াল বৈঠক করায় মোদীকে কটাক্ষ করলেন মূল প্রতিপক্ষ  এসপি- আরএলডি জোটের অন্যতম নেতা জয়ন্ত চৌধরি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৫:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

দেশে বসন্ত। অন্তত ক্যালেন্ডার এবং আবহাওয়া দফতরের হিসাবে। কিন্তু সেই আবহাওয়াকেই ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে বাতিল করা হল উত্তরপ্রদেশের বিজনৌরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম সশরীর জনসভা। এর পঞ্জাবে তাঁর ভার্চুয়াল সভাও আবহাওয়ার ‘কারণ’ দেখিয়ে বাতিল করা হয়েছিল। এ বার বিজনৌরের সভা বাতিল করে ভার্চুয়াল বৈঠক করায় মোদীকে কটাক্ষ করলেন মূল প্রতিপক্ষ সমাজবাদী পার্টি (এসপি)-রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি) জোটের অন্যতম নেতা জয়ন্ত চৌধরি।

Advertisement

আজ বিজনৌরে মোদীর সভা বাতিলের ঘটনায় বিজেপিকে কটাক্ষ করে মিরাটের জনসভা থেকে জয়ন্তের বক্তব্য, বিজনৌরে উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছিল শাসক দল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী সেখানে জনসভায় গেলে মানুষ প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়ে প্রশ্ন তুলত। তাই হঠাৎ করেই বিজেপি খারাপ আবহাওয়ার অজুহাত খাড়া করেছে। জয়ন্ত জানান, প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ বিজেপির মানুষের মোকাবিলা করার ক্ষমতা নেই।

মোদীর সভা বাতিলের পরে আবহাওয়ার পরিস্থিতি জানিয়ে টুইটও করেন এই জাঠ নেতা। তিনি লেখেন, ‘‘বিজনৌরে রোদ উঠলেও বিজেপির আবহাওয়া খারাপ।’’

Advertisement

যদিও মোদী ভার্চুয়াল সভায় স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় পূর্বতন সমাজবাদী পার্টির ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়েছেন। নদী উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ার পাশাপাশি বন্যার জন্যও অখিলেশ সরকারকে দায়ী করেছেন। পাশাপাশি যোগী আদিত্যনাথ সরকারের প্রশংসা করে জানিয়েছেন, বিজেপির আমলে সমস্ত অঞ্চলে সমান
উন্নয়ন করা হয়েছে। বিরোধীদের আখ চাষের বকেয়া সংক্রান্ত অভিযোগকে উড়িয়ে জানিয়েছেন, বিজেপি সরকার দেড় লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে আখচাষিদের বকেয়া মেটাতে। যা আগের দুই সরকারের তুলনায় অনেক বেশি।

কৈরানায় সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী নাহিদ হাসানকে গত মাসে ‘গ্যাংস্টার’ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ তুলে যোগী টুইট করেছিলেন, ‘১০ মার্চের (নির্বাচনী ফল ঘোষণা) পরে সমস্ত গরম বার করে দেবো।’ সেই ঘটনায় যোগীকে নিশানা করে জয়ন্ত আজ জানান, ‘‘ওরা চায় আমরা শান্ত হয়ে যাই। কিন্তু এখনও অনেক তাপ রয়েছে। ওরা চায় জিন্না নিয়ে কথা হোক। কিন্তু আমরা চাকরি, আখের বকেয়া চাইছি।’’ শিল্পোন্নয়নে ব্যর্থতার বিষয়টি তুলেও যোগী সরকারের উদ্দেশে জয়ন্ত বলেন, ‘‘শুধুমাত্র কঙ্গনা রানাওয়তকে শিল্প প্রকল্পের অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তুলে ধরে ওঁর ছবি তোলা হয়েছে।’’

যোগীর ‘গরম...’ মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবও। গতকাল আগরার জনসভায় তিনি বলেছেন, ‘‘গরমের বিষয়ে বলতে পারব না, কিন্তু আমাদের সরকার এলে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে।’’ বিজেপি আমলে চাষিদের দুরবস্থা নিয়ে যোগী সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন এসপি প্রধান। কেন্দ্রের উড়ান প্রকল্পকে কটাক্ষ করে পেট্রোল, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টিও ফের তুলে ধরেছেন। আসন্ন নির্বাচনকে গণতন্ত্র ও সংবিধানকে রক্ষা করার নির্বাচন বলেও উল্লেখ করেন অখিলেশ। তাঁরা ক্ষমতায় এলে চাকরির বয়ঃসীমা বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

এ দিকে বিজেপি নেতা তথা উপ-মুখ্যমন্ত্রী দীনেশ শর্মা গৌতম বুদ্ধ নগরে এক জনসভা থেকে গতকাল বলেছেন, ‘‘ব্রাহ্মণ কোনও জাতি নয়, বরং উন্নত জীবনযাপনের পথ।’’ বিরোধীদের জাতিবিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে জানান, তাঁদের সরকার কোনও
বৈষম্য না রেখে সকলের জন্য কাজ করেছে। এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘‘এক জন জিজ্ঞেস করেছিলেন, ব্রাক্ষ্ণণদের নিয়ে আমার কী মত? আমি বলি, বিজেপি চায় সবার বিকাশ। শুধু ব্রাহ্মণ, গুজ্জর বা জাঠ নয়।’’ তবে নিজে ব্রাহ্মণ হিসাবে গর্বিত বলেও মন্তব্য করেন।

বিজেপির জোটসঙ্গী আপনা দলের (সোনেলাল) নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুপ্রিয়া পটেল আজ সুয়ার কেন্দ্রে হায়দার আলিকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণার সময়ে জানিয়েছেন, হিন্দুত্বের প্রশ্নে বিজেপির সঙ্গে তাঁদের মতাদর্শগত পার্থক্য রয়েছে। মুসলিম প্রার্থীরা তাঁদের কাছে অস্পৃশ্য নন। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, ধর্মের রাজনীতি করে না তাঁর দল। তাঁরা সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে।

তবে অনুপ্রিয়ার এই মন্তব্যের পরে বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, তা হলে কোন স্বার্থে বিজেপির সঙ্গে জোট বেধেছেন তাঁরা। অনেকে ভোটের মুখে অনুপ্রিয়ার অবস্থানকে সুবিধাবাদী বলেও কটাক্ষ করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement