মাথাপিছু চার হাজার টাকা করে দিয়ে কেনা হয়েছে ভোট। বিধানসভা কেন্দ্রটির অন্তত ৮৫ শতাংশ ভোটারকেই টাকা দেওয়া হয়েছে। দাবি আয়কর দফতরের। আর এই চাঞ্চল্যকর অভিযোগের প্রেক্ষিতে তামিলনাড়ুর আরকে নগর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন বাতিল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। জয়ললিতার মৃত্যুতে ওই কেন্দ্রটি খালি হয়েছিল। আসনটি ধরে রাখা এআইএডিএমকে-র শশিকলা শিবিরের কাছে এখন ‘প্রেস্টিজ ফাইট’। জয় সুনিশ্চিত করতেই এই ভাবে বেনজির টাকা ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আয়কর বিভাগের অভিযোগ পাওয়ার পরই নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। শোনা যাচ্ছে আরকে নগরের উপনির্বাচন বাতিলও হতে পারে। এই নিয়ে রবিবার দুপুরে আলোচনায় বসেন নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে কিনা তা নিয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত জানাবে আগামিকাল, সোমবার।
আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে রণক্ষেত্র কাশ্মীর, বুথে হামলা, বাসে আগুন, গুলিতে হত ৬
জয়ললিতার মুত্যুর পর এআইএডিএমকের অবস্থাও বেশ শোচনীয়। দল আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে দুই শিবিরে। এই অবস্থায় আরকে নগরের আসনটিতে জয়লাভ করা এআইডিএমকে-এর কাছে সম্মানের প্রশ্ন। সেই সম্মান বাঁচানোর লড়াইয়ে জিততে শশিকলা নটরাজনের শিবির বিরল পন্থা নিয়েছে বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আয়কর বিভাগ তামিলনাড়ুর স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা শশিকলা ঘণিষ্ঠ সি বিজয়ভাস্করের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নথি উদ্ধার করে। আর এই নথির মধ্যেই ভোট কেনা-বেচার ব্লু-প্রিন্ট ছিল বলে আয়কর বিভাগ সূত্রে খবর। এতে দেখা যায়, ভোট কিনতে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে টাকা বিলানো হয়েছে। কোন কোন নেতা জড়িত, কী পরিমাণ অর্থ তাঁরা বিতরণ করেছেন তার হিসেবও রয়েছে এই নথিতে। গতকাল শনিবার রাজ্যের ৫০টিরও বেশি জায়গায় একযোগে তল্লাশি চালানো হয়। তিনটি পৃথক জায়গা থেকে উদ্ধার হয় মোট ৫ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। এই টাকাও ভোট কেনার জন্য ব্যবহার করার জন্যই রাখা হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
সি বিজয়ভাস্করের বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত।
তবে এই অভিযোগ ও তল্লাশি অভিযানকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করেছেন বিজয়ভাস্কর। তিনি বলেন, ‘‘উপনির্বাচনের আগে আমার প্রচার করার কথা ছিল। তা ঠেকাতেই এই নাটক করা হয়েছে। আয়কর কর্মকর্তাদের কারণে আমি বাড়ি থেকে বেরতে পারিনি।’’
নির্বাচন কমিশন গোটা বিষয়টির তদন্ত শুরু করছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অভিযোগের কারণে উপনির্বাচনটি বাতিল হতে পারে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তি পেতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রভাবশালী নেতাদের। ফলে নতুন করে টালমাটাল পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে তামিলনাড়ু।