—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিধানসভা ভোটের পরে ১৫ দিনে কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ২০ জনে। নিহতদের মধ্যে সেনা ছাড়াও রয়েছেন কাশ্মীরের বাসিন্দা চিকিৎসক, জম্মুর বাসিন্দা স্থপতি ও ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকেরা। ফলে জম্মু-কাশ্মীরে কেন্দ্রের সন্ত্রাস-দমন কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বৃহস্পতিবার গুলমার্গের কাছে সেনার একটি দলকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে তিন সেনা ও দু’জন মালবাহক নিহত হন। নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ওই এলাকায় অনেক সেনা মোতায়েন থাকা সত্ত্বেও এই ঘটনা ঘটেছে। আফারওয়াত পর্বতে জঙ্গিদের একটি দল লুকিয়ে রয়েছে বলে সন্দেহ সেনার। একই ভাবে ২০ অক্টোবর গান্ধেরবালে নির্মীয়মাণ জ়েড মোড় সুড়ঙ্গের কাছে হামলা চালায় জঙ্গিরা। তাতে নিহত হন জম্মুর এক স্থপতি, কাশ্মীরের এক চিকিৎসক ও ভিন্ রাজ্যের ৬ জন শ্রমিক। লাদাখ ও কাশ্মীরের মধ্যে শীতকালেও যোগাযোগ বজায় রাখার ক্ষেত্রে জোজি লা-র পাশাপাশি এই সুড়ঙ্গও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। চিন সীমান্তে ভারত-চিন টানাপড়েনের ফলে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে এই সুড়ঙ্গকে নিশানা করা হয়েছে বলে ধারণা সেনার।
সরকারি সূত্রে খবর, গুলমার্গের হামলাকারী জঙ্গিরা গত গ্রীষ্মেই অনুপ্রবেশ করেছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। সে ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণরেখায় অনুপ্রবেশ-বিরোধী গ্রিড জঙ্গি অনুপ্রবেশ রুখতে অনেকটাই ব্যর্থ বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের মতে, এই জঙ্গিরা পাকিস্তানি। তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে পাক সেনার বর্ডার অ্যাকশন টিম (ব্যাট)। কাশ্মীরিদের উপরে হামলা চালিয়ে তারা উন্নয়নমূলক কাজকর্ম রুখে দিতে চাইছে।
গুলমার্গের বৈঠকের পরে বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন উপরাজ্যপাল মনোজ সিন্হা। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন তিনি। সেনার নর্দার্ন কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এম ভি সুচিন্দ্র কুমারের বক্তব্য, কাশ্মীরে জঙ্গি সন্ত্রাসের চক্র ভাঙার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে সেনা। অনেক নতুন অস্ত্র কেনা হচ্ছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ-বিরোধী গ্রিড পুরোপুরি সক্রিয় রয়েছে বলে দাবি বিএসএফের কাশ্মীর রেঞ্জের আইজি অশোক যাদবের। এ ক্ষেত্রে ফের আলোচনার কেন্দ্রে জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো। ওমর আবদুল্লার সরকার থাকা সত্ত্বেও পুলিশ উপরাজ্যপালের নিয়ন্ত্রণে। জঙ্গি-দমনে গঠিত সংযুক্ত কমান্ডের নেতা এখনও উপরাজ্যপাল। ফলে সন্ত্রাসের প্রশ্নে নির্বাচিত সরকারের কাছে কৈফিয়ৎ চাওয়ার উপায় নেই কাশ্মীরবাসীর। পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পেলে ফের মুখ্যমন্ত্রী সংযুক্ত কমান্ডের মাধ্যমে জঙ্গি-দমন অভিযানে নেতৃত্ব দিতে পারেন বলে আশা অনেকের।