বনমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই গন্ডার হত্যা কাজিরাঙায়!

বিজেপি জোট সরকারের আমলেও শুরু হল গন্ডার হত্যা। তাও আবার সদ্য দায়িত্ব নেওয়া বনমন্ত্রীর কাজিরাঙা সফরকালে। এ নিয়ে চলতি বছরে কাজিরাঙায় আটটি গন্ডার মারা গেল।

Advertisement

রাজীবাক্ষ রক্ষিত

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ১১:৫৮
Share:

বিজেপি জোট সরকারের আমলেও শুরু হল গন্ডার হত্যা। তাও আবার সদ্য দায়িত্ব নেওয়া বনমন্ত্রীর কাজিরাঙা সফরকালে। এ নিয়ে চলতি বছরে কাজিরাঙায় আটটি গন্ডার মারা গেল।

Advertisement

নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর থেকে গন্ডার হত্যা হয়নি। ধরা পড়েছে একের পর এক চোরাশিকারি। মারা পড়েছিল এক জন। গন্ডার সুরক্ষায় প্রধান মুখ্য বনপালের দফতর কাজিরাঙায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।

কিন্তু, বনমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে প্রমীলারানি ব্রহ্মের প্রথম বার সপার্ষদ কাজিরাঙা সফরের প্রথম দিনেই বিপত্তি। খোদ বনমন্ত্রী এবং আরও দুই পূর্ণ মন্ত্রী কেশব মহন্ত ও অতুল বরা, আশপাশের পাঁচ বিধায়ক, বন বিভাগের প্রধান সচিব, গোলাঘাট, কার্বি আংলং, নগাঁও, শোণিতপুর জেলার এসপি, প্রধান মুখ্য বনপাল, মুখ্য বনপাল, কাজিরাঙার উদ্যান অধিকর্তা, ডিএফওদের সঙ্গে গত কাল সন্ধ্যায় কনভেনশন সেন্টারে বৈঠক করার সময়ই, শিকারিরা অগরাতলি রেঞ্জে হানা দেয়। ডিমৌ বন শিবিরের কাছে তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শুনে তল্লাশিতে নামেন বনরক্ষীরা। পরে রাতে জাতীয় সড়ক থেকে ৫ কিলোমিটার ভিতরে একটি স্ত্রী গন্ডারের দেহ উদ্ধার হয়। তার খড়্গ কেটে নেওয়া হয়েছিল। ঘটনার খবর পেয়ে উদ্বিগ্ন বনমন্ত্রী রাতেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। তাঁর নির্দেশে কাজিরাঙার সব কটি প্রবেশ পথ, করিডর, জলপথ বন্ধ করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

Advertisement

গত কাল সকালে স্থানীয় বনকর্মী ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে মত বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রমীলারানি বলেন, গন্ডারহত্যা রোধে প্রয়োজনে নতুন আইন আনা হবে। রক্ষীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে আরও আধুনিক মারণাস্ত্র। আশপাশের গ্রামবাসীদেরই গন্ডার রক্ষায় উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেন তিনি। গ্রামবাসী যুবকদের নিয়ে গড়া হবে নতুন যৌথ সুরক্ষাবাহিনী। তাঁদের দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ।

আজও সকাল থেকে বনমন্ত্রী অরণ্য ঘেঁষা গ্রামগুলির বাড়ি-বাড়ি ঘুরে সংরক্ষণে বন দফতরের হাত মজবুত করার আহ্বান জানান। এই সব গ্রামের দরিদ্র মানুষই টাকার লোভে শিকারিদের পথ দেখায়, আশ্রয় দেয়, খড়্গ লুকিয়ে রাখে। তাই বনমন্ত্রী তাঁদের জন্য বিশেষ প্রকল্পের আশ্বাস দেন। কাজিরাঙা থেকে অনের অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই করায় ক্ষোভ রয়েছে। সে ব্যাপারটি খবর নিয়ে দেখবেন বলেন ব্রহ্ম।

জলসম্পদমন্ত্রী কেশব মহন্ত জানান, কাজিরঙা উদ্যানের ভিতরে জবরদখল না থাকলেও বুড়াপাহাড়, দেউচুর চাং, বান্দরডুবি এলাকাগুলির চরে জবরদখল আছে। প্রাণী করিডর থেকে জবরদখল হঠাতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তা করতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অগপ সভাপতি তথা কৃষিমন্ত্রী অতুল বরা বন দফতরের হাতে জমা থাকা গন্ডারের খড়্গের হিসেব প্রকাশের জন্য বনমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান। আজ স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠন ও যুবক-যুবতীদের সঙ্গেও কাজিরাঙা বাঁচানোর বিষয়ে মত বিনিময় করেন প্রমীলারানি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement