প্রতীকী ছবি।
টিভিতে কী দেখেন? শুধু কেব্ল, নাকি নেটফ্লিক্স-অ্যামাজ়ন প্রাইমও দেখা যায়!
সময় পাল্টেছে। তাই পাল্টাচ্ছে জনগণনার প্রশ্নের ধরনও। ১০ বছর আগে জনগণনায় যেখানে প্রশ্ন ছিল, বাড়িতে টিভি আছে কি না, এ বার সেখানে টিভিতে ডিটিএইচ, কেব্লের পাশাপাশি ইন্টারনেট পরিষেবা আছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রশ্ন পাল্টাচ্ছে দৈনন্দিন পরিষেবার ক্ষেত্রেও। যেমন পানীয় জল। এ ক্ষেত্রেও দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ এখন মিনারেল ওয়াটার খান। তাই গত বার যেখানে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পরিশুদ্ধ পানীয় জল বাড়িতে আসে কি না? এ বার তার পাশাপাশি জানাতে হবে, বাড়িতে মিনারেল ওয়াটার কিনে খাওয়া হয় কি না।
আগামী এপ্রিলে শুরু হচ্ছে জনগণনার কাজ। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের মানুষের চাহিদা, ভোগ্যপণ্যের ব্যবহারের ধরন বুঝতে এক গুচ্ছ নতুন প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল অ্যান্ড সেন্সাস কমিশনার অব ইন্ডিয়া (আরজিসিসিআই)। এ বার জনগণনায় প্রথম ধাপে হবে প্রতিটি বাড়ির চিহ্নিতকরণ। আরজিসিসিআই সূত্রে বলা হয়েছে, অতীতে বাড়ির কর্তা পুরুষ না মহিলা, তা জেনেই ছেড়ে দেওয়া হত। বাড়ির প্রধান তৃতীয় লিঙ্গের কি না, এ বার তা জানানোর সুযোগ থাকছে।
দশ বছরের আগের জনগণনায় জানাতে হত, উত্তরদাতা নিজের বাড়িতে থাকেন, নাকি ভাড়া বাড়িতে থাকেন? এ বার তৃতীয় বিকল্প হিসেবে জানতে চাওয়া হবে—ভাড়া বাড়িতে থাকলেও অন্য শহরে নিজের বাড়ি রয়েছে কি না। আরজিসিসিআই কর্তারা বলছেন, গত দশ বছরে চাকরির খোঁজে দেশের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে স্থানান্তর অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেই কারণে প্রশ্নটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
দেশে মাঝেমধ্যেই টান পড়ে খাদ্যশস্যের। হঠাৎ কোনও খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে যায়। তখন বিদেশ থেকে আমদানি করে অবস্থা সামাল দিতে হয় সরকারকে। তাই এ বারের সমীক্ষায় প্রত্যেক নাগরিককে প্রশ্ন করা হবে, চাল, আটা, জোয়ার, বাজরার মধ্যে কোনটি তাঁর মুখ্য খাদ্যশস্য। যার মাধ্যমে সরকার বুঝতে চাইছে, আগামী দিনে কোন ফসল ফলানোর উপরে জোর দিতে হবে।
ইন্টারনেটের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে গোটা দেশে। গোটা ওয়েব দুনিয়া এখন ধরা দিচ্ছে মুঠোফোনে। সেই জন্য পাল্টানো হয়েছে ইন্টারনেট সংক্রান্ত প্রশ্নও। জানতে চাওয়া হবে, ইন্টারনেট ব্যবহারের মূল উৎস কী? ল্যাপটপ না স্মার্ট ফোন?
নরেন্দ্র মোদী প্রথম দফায় সরকারে এসে দেশ জুড়ে শৌচাগার নির্মাণে গুরুত্ব দেন। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে খোলা জায়গায় শৌচকর্ম যাতে বন্ধ করা সম্ভব হয়, তার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে সরকার। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে এখনও কতটা পথ বাকি, তা জানতে জনগণনায় দু’টি প্রশ্ন রাখা হয়েছে শৌচাগার নিয়ে। উত্তরদাতাকে জানাতে হবে তিনি যে শৌচাগার ব্যবহার করেন তা কেবলমাত্র তাঁর পরিবারের জন্য না কি অন্য কোনও পরিবারের সঙ্গে তা ভাগ করে নিতে হয়। না কি সেটি গণশৌচালয়।
যদি প্রথম প্রশ্নের উত্তর ইতিবাচক হয়, সে ক্ষেত্রে শৌচাগারে ফ্লাশ-ব্যবস্থা রয়েছে কি না, তা সেপটিক ট্যাঙ্ক বা পাইপযুক্ত পয়ঃপ্রণালীর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কি না, তা-ও জানাতে হবে। তেমনি রান্নার ক্ষেত্রে এখনও কত জনকে কাঠ-কয়লা বা কেরোসিনের রান্নার ব্যবস্থা থেকে উজ্জ্বলা যোজনায় উত্তীর্ণ করতে হবে, তা-ও জানার চেষ্টা হবে।