—ফাইল চিত্র।
ইন্টারনেট-সহ জম্মু-কাশ্মীরে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশাসনকে এক সপ্তাহের মধ্যে পর্যালোচনার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। জম্মু-কাশ্মীরে কেন নিষেধাজ্ঞা বহাল রেখেছে সরকার এ নিয়ে মামলা দায়ের করেন কাশ্মীর টাইমস-এর সম্পাদক অনুরাধা ভাসিন এবং কংগ্রেস সাংসদ গুলাম নবি আজাদ। বিচারপতি এন ভি রামানা, আর সুভাষ রেড্ডি এবং বি আর গাভাইয়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল শুক্রবার।
সুপ্রিম কোর্ট এ দিন বলে, “তথ্য আদানপ্রদানের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম ইন্টারনেট। এবং এটি মত প্রকাশের স্বাধীনতারই একটি অংশ। সুতরাং এ বিষয়ে দ্রুত পর্যালোচনা করতে হবে।” শীর্ষ আদালত আরও বলে, অনির্দিষ্ট কালের জন্য ইন্টারনেট বন্ধ রাখা যায় না। এটা ক্ষমতার অপব্যবহার বলেই মনে করছে তারা। সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে মতবিরোধ ইন্টারনেটে নিষেধাজ্ঞার কারণ হতে পারে না। এটা বাক্স্বাধীনতার অংশ। ইন্টারনেটের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত প্রশাসনের। এর পাশাপাশি আদালত বলে, সমস্ত নির্দেশ এবং ফোন পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ১৪৪ ধারার অধীনে যে সব নির্দেশ রয়েছে সরকারকে সেগুলোও প্রকাশ করতে হবে।
১৪৪ ধারার বারংবার প্রয়োগের সমালোচনাও করেছে আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, “মতপার্থক্যকে দমন করার অস্ত্র হিসেবে এটাকে ব্যবহার করা যায় না।” বিচারপতি রামানা বলেন, “মানুষের স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার মধ্যে ভারসাম্য এবং নাগরিকদের অধিকার সুনিশ্চিত করাও কাজ আমাদের। নির্দেশের পিছনে কোনও রাজনৈতিক স্বার্থ আছে কিনা সেটা দেখা কাজ নয় আদালতের।”
আরও পড়ুন: টাটা সন্সে সাইরাস মিস্ত্রির পুনর্বহাল স্থগিত রাখল সুপ্রিম কোর্ট
আরও পড়ুন: জেএনইউয়ের মিছিলে ফের লাঠি পুলিশের
৩৭০ অনুচ্ছেদের প্রত্যাহারের পর থেকেই জম্মু-কাশ্মীরে নিষেধাজ্ঞা জারি রেখেছে কেন্দ্র। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়েই নিষেধাজ্ঞা জারি করে তারা। এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দল-সহ বিভিন্ন মহল কেন্দ্রের ভূমিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। যোগাযোগের মাধ্যম ইন্টারনেট পরিষেবার উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়েও একটা অসন্তোষ ছড়িয়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে। দীর্ঘ দিন ধরে চলা এই অচলাবস্থায় আশার আলো দেখাল সুপ্রিম কোর্ট। এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত নিষেধাজ্ঞা নিয়ে পর্যালোচনার নির্দেশ দেওয়ায় আপাতত স্বস্তির হাওয়া জম্মু-কাশ্মীরে। উল্টো দিকে, আদালতের এই নির্দেশ কেন্দ্রের কাছে একটা বড়সড় ধাক্কা বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।