—ফাইল চিত্র।
তিনি শুধু ইষ্টদেবতা নন, রাষ্ট্রদেবতাও বটে! রাজ্যে বিধানসভা ভোটের এক বছর আগে জগন্নাথদেবের পরিচর্যা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধলে বেগতিক দেখা দিতে পারে, তা বিলক্ষণ জানে ওড়িশার বিজেডি সরকার। তাই আমজনতার ভাবাবেগ সামাল দিতে চেষ্টার কসুর করা হচ্ছে না। তবু ক্ষোভ চাপা দেওয়া দুষ্কর।
বুধবারই মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সরকারের তরফে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের এক মাত্র সদস্যের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, ওড়িশা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঘুবীর দাস রত্নভাণ্ডারের ‘হারানো’ চাবির বিষয়ে তদন্ত করবেন। মন্দিরের প্রশাসনিক কমিটির তরফে বিবৃতিতেও বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, রত্নভাণ্ডারের সিন্দুকের একটি চাবি না-থাকলেও তা অসুরক্ষিত নয়। বাইরের সিন্দুক যখন তালাবন্ধ তখন ভিতরের সম্পদ খোয়া যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু এই সব পদক্ষেপ যথেষ্ট বলে মানতে রাজি নয় ভক্তের মন।
জগন্নাথ মন্দিরের পরিস্থিতি নিয়ে এই ক্ষোভের আঁচ মালুম হচ্ছে টুইটারের পাতায়। সেখানে মন্দিরের প্রভাবশালী সেবায়তদের অলঙ্কারখচিত ছবি দিয়ে প্রশ্ন, রত্নভাণ্ডারের চাবির হলটা কী? আমবাঙালির প্রিয় তীর্থস্থান শ্রীক্ষেত্রের পরিবেশ বুধবারও চাবি-বিভ্রাট নিয়ে বিক্ষোভে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে। শ্রী জগন্নাথ সেনা-র দাবি, যা ঘটনা ঘটেছে তাতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন সঠিক দাওয়াই নয়। তারা বলছে, রাজ্য সরকারের জিম্মায় থাকা চাবি খোয়া গেলে দরকারে তাবড় আইএএস-কর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। অত এব বিষয়টির নিরপেক্ষ তদন্ত সিবিআই-ই করতে পারে! সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে এ দিনই পুরীর কালেক্টরের অফিস ঘেরাও করে ক্ষুব্ধ ভক্তদের একাংশ। সেই সঙ্গে এই গাফিলতির জন্য ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী প্রতাপ সেনা, মন্দিরের মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক প্রদীপকুমার জেনার ইস্তফার দাবি করে তাঁদের কুশপুতুল পোড়ান তাঁরা। একই সঙ্গে ওড়িশা হাইকোর্টেও একটি জনস্বার্থ মামলা করা হয়েছে। ওড়িশা হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি অশোক মহাপাত্রের দায়ের করা মামলায় ওড়িশা সরকারের মুখ্য সচিব থেকে শুরু করে ১০ জন আধিকারিকের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওড়িশার রাজেন্দ্রপ্রসাদ শর্মার আশ্বাস, মন্দিরের নিরাপত্তা ঢের আঁটোসাঁটো করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফুড পার্ক সরানোর হুমকি, যোগগুরুর চাপে মোলায়েম যোগী