army

সংঘর্ষ থেমেই থাকুক, চান বাসিন্দারা, সেনাও

সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা আর তা ভঙ্গ করা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক চাপানউতোর নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন সেনা আর ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা নয়।

Advertisement

সাবির ইবন ইউসুফ

সুলতান ডাকি (উরি) শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২১ ০৬:১৩
Share:

সুলতান ডাকি পোস্টে মোতায়েন প্যারা কমান্ডোর দল। —নিজস্ব চিত্র

পাকিস্তানের ফরোয়ার্ড পোস্ট স্পষ্ট দেখা যায়। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি বজায় রাখার নয়া সমঝোতার পরে পাক সেনাদের গতিবিধিও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তাই উরি সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সুলতান ডাকি গ্রামে ভারতীয় সেনার পোস্টেও ভূগর্ভের বাঙ্কার থেকে বেরিয়ে এসে একটু রোদ পোহানোর সুযোগ পাচ্ছেন প্যারাশুট রেজিমেন্টের কমান্ডোরা।

Advertisement

সংঘর্ষবিরতি নিয়ে সমঝোতা আর তা ভঙ্গ করা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের পারস্পরিক চাপানউতোর নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন সেনা আর ওই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে নতুন অভিজ্ঞতা নয়। কোন আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান এ বার সুর নরম করেছে, সেই অঙ্কও তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেবল সমঝোতাটা বজায় থাকলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে বলেই জানাচ্ছেন সুলতান ডাকিতে মোতায়েন সেনা আর সেখানকার বাসিন্দা, দু’পক্ষই।

উরি সেক্টরের এই গ্রামে ভারতীয় সেনার ফরোয়ার্ড পোস্ট রাস্তা থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে। রাস্তা থেকে পায়ে হেঁটে সেখানে পৌঁছতে লাগে ঘণ্টাখানেক। গত নভেম্বরে এই পোস্টে পাক হামলায় নিহত হন ৫৯ নম্বর মরাঠা রেজিমেন্টের দুই জওয়ান। গ্রামেও পাক গোলা পড়ায় মৃত্যু হয় তিন গ্রামবাসীর।

Advertisement

‘‘দু’দিন ধরে এখানে সব চুপচাপ। তাই আমরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। তবে সতর্কও আছি’’, বললেন প্যারা রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার কর্ণ। আর এক অফিসার মেজর মুকুলের কথায়, ‘‘আগে অনেক বারই সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা করেও তা ভাঙা হয়েছে। আমাদের কাজ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া।’’

সুলতান ডাকিতে মোতায়েন প্যারা কমান্ডোরা ১৩ ফেব্রুয়ারি শেষ বার অভিযান চালিয়েছেন। সে দিন তাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিল এক অনুপ্রবেশকারী জঙ্গি। তার কাছ থেকে এ কে-৪৭ রাইফেল উদ্ধার করেন সেনারা। কমান্ডিং অফিসার কর্ণের কথায়, ‘‘নয়া সমঝোতার পর থেকে শত্রু সেনাদের গতিবিধি স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। তাই আমরাও বাঙ্কার থেকে বেরোতে পারছি।’’

মেজর মুকুল জানালেন, এখানে মোতায়েন সব সেনার কাছে তিন দিনের খাবার মজুত থাকে। প্রয়োজনে অভিযানে গেলে তিন দিন সেই খাবারের উপরে নির্ভর করে বেঁচে থাকতে পারেন তাঁরা। সৌভাগ্যক্রমে উরির এই পোস্টে ফোনের নেটওয়ার্ক চালু রয়েছে। তাই বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন সেনারা। হরিয়ানার বাসিন্দা অজয় কুমার বললেন, ‘‘সমঝোতাটা টিকে গেলে হয়তো ছুটিও পাওয়া যাবে।’’

কাশ্মীরের শহরাঞ্চলে গরম জলই ব্যবহার করেন বাসিন্দারা। এখানে সেনাদের ভরসা নালার জল। কর্ণ বললেন, ‘‘ওই জলের মান খুব ভাল। আমরা পানীয় জল হিসেবে ওই জলই ব্যবহার করি।’’

গোলাগুলি থামায় হাঁফ ছেড়েছেন সুলতান ডাকির গ্রামবাসীরাও। তবে এক প্রবীণ বাসিন্দা বললেন,
‘‘সংঘর্ষ থামার এমন কথা অনেক বার শুনেছি। পরে ফের শুরু হয়েছে। সেটা না হলেই ভাল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement