নবীন পট্টনায়ক
ঘুরে দাঁড়ালেন নবীন পট্টনায়ক। গত দু’দশকের মুখ্যমন্ত্রিত্বে এই প্রথম এক ধাক্কায় মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যকে সরিয়ে দিলেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। পরিবর্তে অন্তর্ভুক্ত হলেন ১১ জন নতুন সদস্য। গোটা রাজ্যে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত রুখতেই এই রদবদল করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে বিজেডি নেতৃত্ব।
দলীয় সূত্র বলছে, এই মুহূর্তে দল ভাঙার মতো পরিস্থিতি না থাকলেও, ভবিষ্যতে বিজেপির প্রভাব রুখতেই এক ধাক্কায় মন্ত্রিসভায় রদবদল করেছেন নবীন। বিজেডি সূত্র বলছে, মূলত সেই মন্ত্রীদেরই সরানো হয়েছে যাদের এলাকায় বিজেডি খারাপ ফল করেছে। পরিবর্তে মন্ত্রিসভায় নবীন প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব বাড়িয়েছে দল। যে জেলাগুলিতে বিজেডি খারাপ ফল করেছে, সেখানে দলকে চাঙ্গা করতে নতুন মন্ত্রীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নতুন মুখের মধ্যে এস এন পাত্র, প্রতাপ রাণারা মন্ত্রিসভায় এসেছেন। মন্ত্রী হয়েছেন স্পিকার পদের দায়িত্বে থাকা নিরঞ্জন পূজারী। নতুন স্পিকার হয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বে থাকা প্রদীপ আমাত। বিজেডি সূত্রের খবর, আজ যারা মন্ত্রী হলেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছিল বিজেপি। মন্ত্রিসভার রদবদল করে বিজেপির সেই কৌশল আটকানোর চেষ্টা হয়েছে।
কিছু দিন ধরেই রাজ্যে বিজেপির উত্থানে চাপ বাড়ছিল নবীনের উপরে। গত ১৭ বছর ধরে নবীন ক্ষমতায় রয়েছেন। তবে এই সময়ে বিরোধী কংগ্রেস বা বিজেপির কোনও প্রভাব দেখা যায়নি। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির উত্থান অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন নবীনকে। ক্ষমতা দখল করতে না পারলেও, দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির কাছে জেলা পরিষদ স্তরে ১৭৮টি আসন হারায় বিজেডি।
আরও পড়ুন:ঋণ খেলাপের জট কাটার আশায় শিল্প
এরই মধ্যে দলের অস্বস্তি বাড়িয়ে মাসখানেক আগে বিজেডি সরকারের কাজের সমালোচনা করে মুখ খোলেন দলের সাংসদ জয় পণ্ডা। তিনি বিজেপি যোগ দিতে পারেন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এমনকী তার সঙ্গে অনেকেই পা বাড়াতে ইচ্ছুক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সে সময়ে তাঁর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ আনেন আর এক বিজেডি সাংসদ তথাগত শতপথী। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিজেপির নির্দেশেই দল ভাঙার খেলায় নেমেছেন পণ্ডা। পরে অবশ্য নিজের অবস্থান বদলে ফেলেন পণ্ডা।
জাতীয় রাজনীতিতেও সক্রিয় হতে শুরু করেছেন নবীন। বিজেপি যে ভাবে তাঁর রাজ্যে শিকড় ছড়াচ্ছে, তা থেকে নবীন একটি বিষয়ে নিশ্চিত— আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য দখলে ঝাঁপিয়ে পড়বেন নরেন্দ্র মোদীরা। সেই কারণে দেশে যখন অ-বিজেপি ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি একজোট হওয়ার চেষ্টা করেছে, তাতে আগ্রহ দেখতে শুরু করেছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও এ নিয়ে তাঁর আলোচনা হয়েছে। কথা হয়েছে সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও।