ঘন ধোঁয়াশায় ঢাকা পড়েছে দিল্লি। —এএফপি
গত নভেম্বরের ছায়া। ফের দূষণের কবলে রাজধানী দিল্লি ও ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওন (এনসিআর)। ঘন ধোঁয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ল রাজধানীর আকাশ। দূষণের মাত্রা বিপজ্জনক স্তরে নেমে এসেছে। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আরও তিন-চার দিন দূষণ-গ্রাস থেকে মুক্তি নেই দিল্লিবাসীর। পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ঘরবন্দি থাকার।
বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘন ধোঁয়াশার মেঘে ঢাকা পড়ে রাজধানী দিল্লি-এনসিআর এলাকা। তার সঙ্গে তাপমাত্রার পারদও প্রায় অসহনীয় মাত্রায়। এ দিন দিল্লিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। প্রচণ্ড গরম এবং দূষণের জেরে রাস্তায় বেরিয়ে বিপাকে পড়েন দিল্লিবাসী। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যার সঙ্গেই শুরু হয় কাশি, চোখ জ্বালা-সহ দূষণের নানা উপসর্গ। অনেকেই মাস্ক পরে বাইরে বেরিয়েছেন। তবে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে চাননি অনেকেই।
বাতাসে ১০ মিলিমিটারের কম ঘনত্বের কণার উপস্থিতি পরিমাপের একককে বলা হয় ‘পিএম-১০’। পরিবেশ দফতরের হিসেবে বৃহস্পতিবার এই পিএম-১০ দিল্লিতে ৮৩০ এবং দিল্লি-এনসিআর মিলিয়ে গোটা এলাকার হিসেবে ছিল ৭৯৬। সবেচেয়ে বেশি ছিল আনন্দবিহার এলাকায় ৯২৯। যা বিপজ্জনক বলে ধরা হয়। এর পাশাপাশি এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা এসিআই দিয়ে দূষণের পরিমাপ করা হয়। এই এসিআই ০-৫০ ভাল, ৫১-১০০ সন্তোষজনক, ১০১-২০০ মোটামুটি, ২০১-৩০০ খারাপ, ৩০১-৪০০ খুব খারাপ, এবং ৪০১-৫০০ বিপজ্জনক। এ দিন দিল্লির অনেক জায়গাতেই এই এসিআই ৫০০-র উপরে উঠে যায়। তার জেরেই ঘন ধোঁয়াশা তৈরি হয়।
গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
আবহাওয়া দফতরের ব্যাখ্যা, সম্প্রতি পশ্চিম ভারতে পর পর ধুলোঝড় বা ‘আঁধি’ হয়েছে। তার জেরেই দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা অত্যধিক বেড়ে গিয়েছে।
দিল্লিতে টানা প্রায় তিন মাস ধর্মঘট চালিয়ে যাচ্ছেন আইএএস অফিসাররা। আবার দিল্লির লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরের ভবনের সামনে তিন দিন ধরে সপার্ষদ ধর্নায় বসে অরবিন্দ কেজরিবাল। এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘আঁধি’র মতোই ধেয়ে আসছে সমালোচনার ঝড়। কেউ কেন্দ্র, কেউ বা দিল্লির কেজরিবাল অ্যান্ড কোম্পানিকে কাঠগড়ায় তুলে তোপ দেগেছেন। এক জন যেমন টুইটারে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শহরে দূষণের মাত্রা ১৮ গুণ বেড়ে গিয়েছে আর রাজ্য ও কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা এসি রুমে ধর্নায় বসে। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?’
আরও পড়ুন: রাজস্থানে বেড়াতে এসে নিখোঁজ বিদেশিনী, উদ্বিগ্ন সুষমা
আরও পড়ুন: ৩০১৩ সালের টিকিট! ১৩ হাজার জরিমানা রেলের
গত বছরের নভেম্বরেও দূষণের জেরে নাভিশ্বাস উঠেছিল দিল্লিবাসীর। তখনও রাস্তায় মুখোশ পরে বেরোতে হয়েছিল রাজধানীর বাসিন্দাদের। ফের কার্যত সেই নভেম্বরেরই ছায়া দিল্লির আকাশে।