সুপ্রিম কোর্ট জানাল, উপরাজ্যপালের মনোনীত পুরসভার সদস্যেরা দিল্লির মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। — ফাইল ছবি।
স্বস্তিতে আপ। উপরাজ্যপালের মনোনীত পুরসভার সদস্যরা দিল্লির মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন না। শুক্রবার জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে শীঘ্রই মেয়র পাবে দিল্লি।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় শুক্রবার বলেন, ‘‘এক বার মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর অন্য নির্বাচন সংক্রান্ত বৈঠক হবে। মেয়রের নির্বাচন সকলের আগে হওয়া উচিত। এর পর মেয়রই ডেপুটি মেয়র নির্বাচনের জন্য বৈঠকের ডাক দেবেন।’’
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী টুইটারে লিখেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এই রায় গণতন্ত্রের জয়। সুপ্রিম কোর্টকে অনেক ধন্যবাদ। আড়াই মাস পর এ বার দিল্লি নতুন মেয়র পাবে। এটা প্রমাণিত হয়ে গেল যে, উপরাজ্যপাল আর বিজেপি মিলে দিল্লিতে বেআইনি এবং অসাংবিধানিক নির্দেশ পাশ করাচ্ছে।’’
গত দু’মাসে দিল্লিতে তিন বার ভেস্তে গিয়েছে মেয়র নির্বাচন। দিল্লির শাসকদল আম আদমি পার্টি (আপ) আঙুল তুলেছে বিজেপির দিকে। তাদের অভিযোগ, মেয়রের পদে নিজেদের প্রার্থীকে বসিয়ে দিল্লি পুরসভার ক্ষমতা দখল করতে চাইছে বিজেপি। গত ডিসেম্বরে দিল্লির পুরনির্বাচন (এমসিডি) হয়। সেখানে বিজেপির থেকে অনেক বেশি আসন পেয়েও এখনও মেয়রের পদ অধরাই থেকে গিয়েছে আপের।
শেষ নির্বাচনে উপরাজ্যপাল ভিকে সাক্সেনা মনোনীত সদস্যরা (অল্ডারম্যান) ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। আপ বাধা দিলে গোল বাধে। ফলে পিছিয়ে যায় নির্বাচন। আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আশঙ্কা ছিল, ওই মনোনীত সদস্যেরা বিজেপির পক্ষে ভোট দিলে লাভবান হবে বিজেপিই।
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা দিল্লির নির্বাচিত সরকারকে উপেক্ষা করে একতরফা ভাবে ১০ জন অল্ডারম্যান নিয়োগ করে মেয়র নির্বাচনে তাঁদের ভোটাধিকার দিয়েছিলেন। সেই সিদ্ধান্তকেই শীর্ষ আদালতে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন আপের মেয়র পদপ্রার্থী শেলি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, মনোনীত সদস্যদের ভোটাধিকার থাকা উচিত নয়।
ডিসেম্বরের গোড়ায় পুরভোটে ২৫০ আসনের দিল্লি পুরনিগমে ১৩৪টি ওয়ার্ডে জিতেছিল কেজরীওয়ালের আপ। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেমে আসে ১০৪-এ। ৯টি ওয়ার্ডে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থীরা। দিল্লির মেয়র নির্বাচনে সেখানকার রাজ্যসভার ৩ জন ও লোকসভার ৭ জন সাংসদ এবং ১৪ জন বিধায়কেরও ভোটাধিকার রয়েছে। যার অর্থ, মোট ২৭৪টি ভোটের মধ্যে যে দল ১৩৮টি ভোট পাবে, সেই দলের প্রার্থীই মেয়র পদে জয়ী হবেন। অঙ্কের হিসাবে জয় অসম্ভব হলেও পদ্মশিবির মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ায় নতুন করে অশান্তি তৈরি হয় দিল্লিতে।