সচিন পাইলট (বাঁ দিকে) এবং রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।
আগামী রবিবার (১১ জুন) পিতা রাজেশ পাইলটের মৃত্যুদিনে কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গড়ার কথা ঘোষণা করতে পারেন তিনি! রাজস্থানের আসন্ন বিধানসভা ভোটে হাত মেলাতে পারেন অরবিন্দ কেজরীওয়ালের আম আদমি পার্টি এবং সাংসদ হনুমান বেনিওয়ালের দল রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টি (আরএলপি)-র সঙ্গে। ‘বিক্ষুব্ধ’ সচিন পাইলটকে নিয়ে ইতিমধ্যেই দানা বেঁধেছে এমন গুঞ্জন। যদিও তা মানতে নারাজ কংগ্রেসের অন্দরে পাইলটের ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত।
শুক্রবার একটি সাক্ষাৎকার গহলৌত বলেন, ‘‘পাইলটের সঙ্গে আমার স্থায়ী সমঝোতা হয়ে গিয়েছে।’’ গত ২৯ মে দিল্লিতে রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক কেসি বেনুগোপালের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন গহলৌত এবং সচিন। এই প্রথম বার সেই বৈঠক সম্পর্কে মুখ খুলে ‘স্থায়ী’ সমঝোতার দাবি করলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্য চলতি সপ্তাহেই কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়েছে, সচিন দল ছাড়ছেন না। এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিংহ সূরজেওয়ালা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘সচিন আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তিনি কংগ্রেসেই থাকবেন।’’
কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পাইলট শিবিরের তরফ থেকে এখনও ‘পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপ’ সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। কংগ্রেসের একটি সূত্রের খবর ওই বৈঠকে পাইলটের তরফে পূর্বতন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের জমানায় নানা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি, গহলৌত অনুগামী বিধায়কদের দলবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করার দাবি করেন তিনি। পাইলটের দাবি, গত সেপ্টেম্বরে গহলৌত-ঘনিষ্ঠ যে ৮২ জন বিধায়ক শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হোক।
প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে ছিল কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচন। সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তখন গহলৌতকে এগিয়ে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি সভাপতি হলে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি পাইলট, এ রকমই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সে সময় গহলৌত অনুগামী ৮২ জন বিধায়ক কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা এআইসিসি প্রতিনিধিদের বৈঠকেও হাজির হননি। শেষ পর্যন্ত ক্ষুব্ধ হাইকমান্ড সভাপতি হওয়ার দৌড় থেকে সরিয়ে দিয়েছিল গহলৌতকে।
২০২০ সালে গহলৌত সরকারের বিরুদ্ধে ‘অভ্যুত্থান’ চালাতে গিয়ে ‘ব্যর্থ’ হয়েছিলেন পাইলট। সে সময় অনুগামী ১৯ জন বিধায়ককে নিয়ে দিল্লির কাছে একটি রিসর্টে গিয়ে উঠেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রত্যাশী পাইলটের এই পদক্ষেপে কংগ্রেসের অন্দরে আশঙ্কা তৈরি হয় যে, বিজেপির সহায়তায় তিনিও রাজস্থানে কংগ্রেস সরকার ফেলে দিতে পারেন। তবে কিছু দিন পরেই বিদ্রোহে ইতি টানেন রাজেশ পাইলটের পুত্র। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ খোয়াতে হয়েছিল তাঁকে।