ফতোয়ার মুখেও নিজের বিশ্বাসে অনড় তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান রুহি জৈন। ভিন্ন ধর্মের কাউকে বিয়ে করা ও সিঁদুর-মঙ্গলসূত্র পরার বিরুদ্ধে দেওবন্দের কট্টরবাদী সুন্নি সংগঠন ‘দার-উল-উলুম’-এর ইমাম মুফতি আসাদ ওয়াসমি ফতোয়া জারি করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে এর প্রতিক্রিয়ায় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ‘লভ জেহাদের’ অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন উত্তরপ্রদেশের কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী নেত্রী সাধ্বী প্রাচী। নুসরত আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, ‘‘কোনও ধর্মের কট্টরপন্থীদের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিলে বা প্রতিক্রিয়া জানালে সেটা শুধু ঘৃণা ও হিংসাই ছড়ায়। ইতিহাস তার সাক্ষী।’’
‘দার-উল-উলুম’-এর ইমামের বক্তব্য, ‘‘খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তিনি জৈন সম্প্রদায়ের এক জনকে বিয়ে করেছেন। ইসলাম বলে, এক জন মুসলমান শুধু মুসলমানকেই বিয়ে করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, নুসরত এক জন অভিনেত্রী। অভিনেত্রীরা ধর্মের শাসন মানেন না। যা ইচ্ছা তা-ই করেন। সেটাই সংসদে দেখা গিয়েছে। তিনি সংসদে সিঁদুর এবং মঙ্গলসূত্র পরে এসেছিলেন।’’
ইমামের এই ফতোয়া প্রকাশ্যে আসার পরই আসরে নামেন হিন্দু কট্টরবাদীরা। সাধ্বী প্রাচী বলেন, ‘‘যদি কোনও মুসলমান মহিলা সিঁদুর এবং মঙ্গলসূত্র পরেন তাকে ইমামরা বলেন, হারাম। বলতে খারাপ লাগছে, লভ জেহাদের নামে হিন্দু মেয়েদের আটকে রেখে তাদের বোরখা পরানো তাদের কাছে হারাম নয়!’’
এমন বিতর্ককে নুসরত শুধু খারিজই করেননি। টুইটারে জানিয়েছেন নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা। লিখেছেন, ‘‘সকলকে নিয়ে যে ভারত, আমি তার প্রতিনিধি।... যে ভারত জাতপাত-ধর্মের সমস্ত বাধার ঊর্ধ্বে। সব ধর্মকেই আমি শ্রদ্ধা করি। এখনও আমি এক জন মুসলিম। এবং আমি কী পরব, তা নিয়ে কারও মন্তব্য করা উচিত নয়। বিশ্বাসের স্থান পোশাক-সাজসজ্জার উপরে। বিশ্বাসের মানে সব ধর্মের অমূল্য শিক্ষাগুলিকে মনে গ্রহণ করা ও তা পালন করা।’’
নুসরত গোটা বিতর্কে জল ঢালতে চাইলেও কট্টরবাদীরা এতে ক্ষান্ত হয়েছেন, এমন অবশ্য নয়।